ক্যালিফোর্নিয়ার লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে (এলএলএনএন) আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার ‘এল কাপিতান’। ৬০ কোটি ডলারে নির্মিত কম্পিউটারটি অত্যন্ত গোপনীয় জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত কাজ পরিচালনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এল কাপিতানের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ভূগর্ভস্থ পরীক্ষার অনুপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক মজুদের নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করা, যা ১৯৯২ সাল থেকে নিষিদ্ধ। এছাড়া উচ্চ শক্তি ও ঘনত্ব সম্পর্কিত পদার্থবিদ্যা, নতুন উপাদান আবিষ্কার, পারমাণবিক ডাটা বিশ্লেষণ ও অস্ত্রের নকশাবিষয়ক গবেষণাকাজে কম্পিউটারটি ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি অন্যান্য গোপন কাজও পরিচালনা করা হবে।
লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এল কাপিতান হাই-পারফরম্যান্স লিনপ্যাক (এইচপিএল) বেঞ্চমার্ক পরীক্ষায় ১ দশমিক ৭৪২ এক্সাফ্লপস গতি অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের দ্রুততম সুপারকম্পিউটারের খেতাব অর্জন করেছে। সিস্টেমটির সর্বোচ্চ গতি ২ দশমিক ৭৪৬ এক্সাফ্লপস। এক্সাস্কেল কম্পিউটিং গতিতে পৌঁছানো তৃতীয় মেশিন এটি। কম্পিউটারটির গতি ফ্লোটিং-পয়েন্ট অপারেশনস পার সেকেন্ড (ফ্লপস) এককে গণনা করা হয়েছে। এল কাপিতান প্রতি সেকেন্ডে এক কুইন্টিলিয়ন (১০^১৮) গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম।
স্পেস ডট কমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের দ্বিতীয় দ্রুততম সুপারকম্পিউটার ‘ফ্রন্টিয়ার’ ইলিনয়ের ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে অবস্থিত। কম্পিউটারটির সাধারণ গতি ১ দশমিক ৩৫৩ এক্সাফ্লপস এবং সর্বোচ্চ গতি ২ দশমিক ০৫৬ এক্সাফ্লপস। গতির ক্ষেত্রে এল ক্যাপিটানের উন্নতি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটিংয়ে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য নেক্সট প্লাটফর্মের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এল ক্যাপিটান পরিচালিত হয় ১ কোটি ১০ লাখের বেশি প্রসেসিং ও গ্রাফিকস কোর থেকে, যেগুলো ৪৪ হাজার ৫৪৪টি এএমডি এমআই৩০০এ চিপে বিভক্ত। প্রতিটি প্রসেসিং ইউনিটে ১২৮ গিগাবাইট উচ্চগতির মেমোরি রয়েছে, যা কম শক্তি খরচ করে কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এল কাপিতান তৈরির কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের মে মাসে এবং এটি অনলাইনে যুক্ত হয় ২০২৪ সালের নভেম্বরে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগের ‘কোরাল-২’ প্রোগ্রামের অধীনে নির্মাণ হয়েছে।