ভুয়া অ্যাকাউন্ট এবং আপত্তিকর ও সহিংসতামূলক কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা নিয়ে প্রতিষ্ঠার পর বর্তমানেই সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছে ফেসবুক। এ পরিস্থিতি সামলাতে সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটিকে কয়েকটি বিভাগে বিভক্ত করার পরামর্শ আসছে। তবে কোম্পানির সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ বরাবরের মতো এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আবারো বলেছেন, ফেসবুককে বিভক্ত করা কোনো সমাধান হতে পারে না। সংকট সমাধানে ফেসবুক যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে কার্যকরভাবে কাজ করছে।
গত বৃহস্পতিবার ফেসবুক জানিয়েছে, মাসওয়ারি হিসাবে ফেসবুকের সক্রিয় অ্যাকাউন্টের ৫ শতাংশ ভুয়া। গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৩০০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হয়েছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো দেশে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেশি।
এই উদাহরণ তুলে ধরে গত বৃহস্পতিবার এক কনফারেন্সে জাকারবার্গ বলেন, ভুয়া অ্যকাউন্ট শনাক্ত এবং আপত্তিকর কনটেন্ট ছড়ানো ঠেকাতে ফেসবুকের বিশেষ টিম দক্ষতার সঙ্গেই কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে ফেসবুককে বিভক্ত করা হলে এই কাজগুলোতে বিঘ্ন ঘটবে।
ফেসবুক অনেক বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং সোস্যাল মিডিয়ার বাজারে একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে—এ যুক্তিতে ফেসবুককে বিভক্ত করার পক্ষে যারা কথা বলছেন তাদের উদ্দেশে জাকারবার্গ বলেছেন, ফেসবুক এবং ফেসবুক পরিবারের অন্যান্য অ্যাপ যেমন- ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপ একটি গতিশীল ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত বিভিন্ন অ্যাপের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে। বিশেষ করে টুইটার, টিকটক, ইউটিউব, স্ন্যাপচ্যাট এখন ফেসবুক পরিবারের জন্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের বাজারেও ফেসবুক গুগলের চেয়ে পিছিয়ে আছে।
জাকারবার্গ তার অবস্থানের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ফেসবুককে বিভক্ত করা মানে অনলাইনে ক্ষতিকর কনটেন্ট ও নির্বাচনে হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষাকবচ শক্তিশালীকরণ এবং ব্যক্তিগত তথ্যের স্থানান্তরযোগ্যতার মতো কাজগুলোতে রসদের ঘাটতি পড়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, এসব এখন সোস্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আমি মনে করি না কোম্পানিকে বিভক্ত করার নীতিতে এসব বিষয়কে বিবেচনা করার অবকাশ থাকবে। প্রকৃতপক্ষে বিভক্ত করলে এই কাজগুলো করা আরো কঠিন হয়ে যাবে বলেই আমি মনে করি।
জাকারবার্গ জানান, সোস্যাল মিডিয়াতে নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড এবং কনটেন্ট পোস্ট ঠেকাতে মানবকর্মী ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ওপর ব্যাপক বিনিয়োগ করতে পারার প্রধান কারণই ফেসবুক অবিভক্ত থাকা।
এদিকে সন্দেহজনক কোনো কনটেন্ট মুছে ফেলার পর ব্যবহারকারীর আপত্তি বা আবেদন গ্রহণ ও বিবেচনার জন্য আলাদা একটি আদালত গঠনের ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুক।