শুল্কের চাপ, উৎপাদনের স্থানান্তর ও সম্ভাব্য ডিজাইন পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে আসছে পরবর্তী আইফোন সিরিজ — দামও বাড়তে পারে।
মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল তাদের আসন্ন শরৎকালীন আইফোন লাইনআপের দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে। তবে এই দাম বাড়ানোর পেছনে শুধু মুনাফা নয়, রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা, যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদন ব্যয়েও।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সূত্রে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, অ্যাপল চাইছে এমনভাবে দাম বৃদ্ধি করতে যাতে সেটা চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত না হয়। এর কারণ রাজনৈতিক সমালোচনা এড়ানো এবং মার্কিন ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখা।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দুই দেশই পারস্পরিক শুল্ক কিছুটা কমানোর ঘোষণা দিলে অ্যাপলের শেয়ারমূল্য ৭% পর্যন্ত বেড়ে যায়। তবে ৩০% আমদানি শুল্ক এখনো বহাল আছে, যা অ্যাপলের মতো চীনা উৎপাদননির্ভর কোম্পানির জন্য চাপ তৈরি করছে।
ভারতে উৎপাদনে জোর
বাণিজ্য উত্তেজনা ও উচ্চ শুল্কের কারণে অ্যাপল ইতিমধ্যেই ভারতে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। অ্যাপলের ভাষ্য, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে শুধুমাত্র শুল্কজনিত কারণে তাদের ৯০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপল দ্রুততার সঙ্গে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কেন্দ্রস্থ করে তুলছে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ সহজ হবে এবং শুল্কের প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে।
দাম কত বাড়তে পারে?
বর্তমানে আইফোন ১৬ সিরিজের মূল মডেলের দাম ৭৯৯ ডলার হলেও, যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কসহ তা বাড়তে পারে ১,১৪২ ডলার পর্যন্ত, যা ৪৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এই হিসাব করেছে রোজেনব্লাট সিকিউরিটিজ।
নতুন ফিচারের প্রতিশ্রুতি
দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা তৈরি করতে অ্যাপল পরিকল্পনা করছে বেশ কিছু নতুন ফিচার ও ডিজাইন পরিবর্তন। তার মধ্যে রয়েছে:
-
অতিস্লিম বডি
-
উন্নত AI ফিচার
-
দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি
-
হাই-এন্ড ক্যামেরা আপগ্রেড
তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, দাম বাড়ালে স্যামসাং, গুগল ও অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সুযোগ নিয়ে মার্কেট শেয়ার দখলের চেষ্টা করতে পারে।
রাজনৈতিক চাপও বেড়েছে
শুধু বাজার নয়, রাজনৈতিক চাপ এড়াতেও অ্যাপলকে কৌশলী হতে হচ্ছে। যেমন, গত মাসে আমাজনের ‘হল’ ইউনিট আমদানি খরচ তালিকাভুক্ত করলে, সেটিকে ট্রাম্প প্রশাসন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দেয়। ফলে অ্যাপল চাইছে যেন তাদের সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক বিতর্ক না জড়ায়।