আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে ব্যক্তিশ্রেণির পাশাপাশি কোম্পানির জন্যও আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর পাশাপাশি ভ্যাট ও কর কাঠামোতেও আসছে বেশ কিছু পরিবর্তন, যার মধ্যে রয়েছে বেশকিছু প্রযুক্তিপণ্য ও শিল্প সরঞ্জামের ওপর নতুন করে কর আরোপের প্রস্তাব।
এনবিআরের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, কম্পিউটার প্রিন্টার, রাউটার, মডেম, বিমান ইঞ্জিন, বাস, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, শিল্প রাসায়নিক, নেটওয়ার্কিং ডিভাইস ও প্রিন্টার-সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশকে এবার করের আওতায় আনা হতে পারে।
শুধু নতুন পণ্য নয়, ভ্যাট বাড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনারও। দেশীয় উৎপাদন পর্যায়ে এসব পণ্যের ওপর বর্তমানে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর রয়েছে। তবে আগামী অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার চিন্তাভাবনা চলছে। মাত্র ছয় মাস আগে এই খাতের কর্পোরেট কর দ্বিগুণ করেছিল সরকার।
মোবাইল ফোন উৎপাদন খাতেও বাড়তে পারে ভ্যাট। বর্তমানে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের ওপর নির্ভর করে ৫ ও সাড়ে ৭ শতাংশ হারে যে ভ্যাট আরোপিত রয়েছে, তা বাড়িয়ে সাড়ে ৭ ও ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব উঠেছে। একইভাবে, ব্যাটারি উৎপাদন খাতে বিদ্যমান সাড়ে ৭ শতাংশ কর্পোরেট কর দ্বিগুণ করা হতে পারে।
আয়কর বিভাগের সূত্র জানায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর থেকে ব্যক্তিশ্রেণির অনলাইন রিটার্নে ভালো সাড়া পেয়েছে এনবিআর। ইতোমধ্যে সরকারি কর্মকর্তা ও বহুজাতিক কোম্পানির কর্মীদের জন্য এ ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৬ লাখ ব্যক্তি অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আসন্ন বাজেটে কোম্পানি করদাতাদের জন্যও অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।
এদিকে গত কয়েক বছর ধরে সরকার কর্পোরেট কর ধারাবাহিকভাবে কমালেও, ব্যবসায়ীরা বারবার অভিযোগ করছেন— এর বাস্তব সুফল পাচ্ছেন না তারা। অতীতে কিছু ‘শর্তসাপেক্ষে’ কর কমানো হলেও আগামী অর্থবছরে সেই শর্ত কিছুটা শিথিল হতে পারে বলে আভাস মিলেছে। তবে আপাতত কর্পোরেট কর হার কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।