ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও ওয়াই–ফাই ধীরগতি? সংকেত ঠিকঠাক পাওয়া যাচ্ছে না? এমন ভোগান্তি এখন ঘরে ঘরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাউটারের অবস্থান, সেটিংস কিংবা বাড়তি কিছু ডিভাইস ব্যবহারে সহজেই বাড়ানো যায় ওয়াই–ফাইয়ের রেঞ্জ।
ঘরের এক কোনায় রাউটার রেখে ভালো সংকেত আশা করাটা বাস্তবসম্মত নয় বলে মত দিয়েছেন প্রযুক্তিবিদরা। তাই তাঁরা রাউটার খোলামেলা জায়গায়, সম্ভব হলে ঘরের মাঝখানে রাখার পরামর্শ দেন। বাড়ির দেয়াল, ফ্রিজ, লোহার আলমারির পেছনে রাউটার রাখলে সংকেত দুর্বল হয়।
ঢাকার গুলশান এলাকার বাসিন্দা শারমিন ইসলাম বলেন, ‘বাসায় এক রুমে ওয়াই–ফাই ভালো চলে, আরেক রুমে একদমই পাওয়া যায় না। পরে জানলাম, রাউটারের পাশে মাইক্রোওয়েভ ও বড় লোহার আলমারি থাকার কারণেই এমন হচ্ছে।’
রাউটারের অ্যান্টেনার দিক পরিবর্তন করেও সিগন্যালের উন্নতি করা যায়। অনেক রাউটারেই দুইটি অ্যান্টেনা থাকে—একটি সোজা রাখলে এবং অন্যটি পাশে ঘোরালে ভালো কাভারেজ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া বাজারে এখন রেঞ্জ এক্সটেন্ডার বা রিপিটার পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো মূল রাউটারের সংকেত বাড়িয়ে বাড়ির কোণায় কোণায় পৌঁছে দিতে পারে। TP-Link, Xiaomi ও Netgear–এর ডিভাইসগুলো তুলনামূলক ভালো সেবা দিচ্ছে।
রাউটারের সেটিংসে গিয়ে ওয়াই–ফাই চ্যানেল পরিবর্তন করাও গুরুত্বপূর্ণ। আশপাশে অনেক রাউটার থাকলে একই চ্যানেলে সংকেতের মারামারি হয়। কম ব্যবহৃত চ্যানেল (যেমন: ১, ৬ বা ১১) নির্বাচন করলে সংকেত ভালো থাকে।
বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সদস্য তন্ময় হক বলেন, ‘অনেকেই জানেন না, তাঁদের পুরোনো রাউটারই সমস্যার মূল কারণ। বাজারে এখন আধুনিক ডুয়াল ব্যান্ড রাউটার পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলোর রেঞ্জ ও গতি দুটোই অনেক ভালো।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘর বড় হলে মেশ ওয়াই–ফাই সিস্টেম ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো সমাধান। এটি একাধিক ডিভাইসের মাধ্যমে সমানভাবে পুরো বাসা বা অফিসে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়।
অতিরিক্ত কিছু ডিভাইস যেমন: মাইক্রোওয়েভ ও ব্লুটুথ স্পিকারও ওয়াই–ফাই সংকেতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই রাউটারের চারপাশ খালি রাখা এবং মাঝেমধ্যে রিস্টার্ট দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।