অপারেটরদের নতুন সংযোগ বন্ধ রাখতে বিটিআরসির কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। সোমবার সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান তিনি।
মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে বর্তমানে টেলিযোগাযোগ সেবার কোয়ালিটি অব সার্ভিস সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর অন্যতম কারণ অপারেটরদের গ্রাহক অনুপাতে তরঙ্গ কম থাকা বলে আমরা মনে করি। ফলে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা, কলড্রপ, ডাটা ব্যবহারে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রামীণফোন ৩৭ মেগাহার্টজ তরঙ্গ দিয়ে সেবা দিচ্ছে ৭ কোটি ২৫ লাখ গ্রাহককে। অর্থাৎ প্রায় ২০ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহৃত হচ্ছে। রবির ৩৬.৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে গ্রাহক প্রায় ৪ কোটি ৮০ লাখ। অর্থাৎ প্রায় ১৪ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলালিংকে ৩ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে তরঙ্গ আছে ৩০.৬ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। অর্থাৎ প্রায় ১৩ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহৃত হয়। রাষ্ট্রয়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটকের ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার গ্রাহকের বিপরীতে তরঙ্গ আছে ২৫.২ মেগাহার্টজ। অর্থাৎ প্রায় ৪০ হাজার গ্রাহকের বিপরীতে ব্যবহৃত হচ্ছে ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গ।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদিও জানি অপারেটরদের তরঙ্গ মূল্য নিয়ে আপত্তি রয়েছে। তাই জনস্বার্থে জনগণের সম্পদ তরঙ্গের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে মূল্য সহনীয় পর্যায় এনে কীভাবে সেবার মান বৃদ্ধি করতে অপারেটরদের বাধ্য করা যায় তার একটি গাইডলাইন প্রস্তুতের আহ্বান জানাই।
মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, বিভিন্ন দেশের তরঙ্গ ব্যবহার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১ মেগাহার্টজ তরঙ্গের বিপরীতে গ্রাহক শ্রীলঙ্কায় ২ লাখ ৭০ হাজার, পাকিস্তানে ১ লাখ ৪০ হাজার, আফগানিস্তানে ২ লাখ ৯০ হাজার, নেপালে ৫ লাখ ২২ হাজার, মালয়েশিয়ায় ২ লাখ, অস্ট্রেলিয়ায় ১ লাখ ২০ হাজার, জার্মানিতে ৩ লাখ ৯৯ হাজার।
তিনি বলেন, অথচ আমাদের দেশে খুবই কম তরঙ্গ ব্যবহার করে গ্রাহক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এত কম পরিমাণ তরঙ্গ ব্যবহার করার ফলে একদিকে যেমন বাড়ছে কলড্রপ, তেমনি নেটওয়ার্ক কাভারেজ বাড়াতে যত্রতত্র বিটিএস বসানোয় তেজস্ক্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রাহকদের সেবার মান নিম্নমুখী হওয়ার সাথে সাথে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। তাই গ্রাহকস্বার্থ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনা করে পর্যাপ্ত তরঙ্গ ক্রয় না করা পর্যন্ত নতুন করে সিম বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার আবেদন জানাচ্ছি।