সেবা না পাওয়ায় মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। গত ১১ মাসে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কাছে সাড়ে ৫ লাখ অভিযোগ জমা পড়েছে।
বিটিআরসির কাছে জমা হওয়া অভিযোগ থেকে দেখা গেছে, বছরের শুরুতে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিল। করোনা মহামারির মধ্যে অভিযোগ কিছুটা কমলেও বছরের শেষ দিকে এসে অভিযোগ বেড়ে গেছে। গত জানুয়ারিতে অভিযোগ করেছেন ৮০ হাজারেও বেশি। তবে করোনা শুরুর পর এপ্রিল মাসে অভিযোগ কমে দাঁড়িয়েছিল ৫ হাজার ৩১৬টি। মে, জুন ও জুলাই মাসে অভিযোগ কম ছিল। ঐ তিন মাসে অভিযোগ এসেছিল ২৫ হাজারের কম।
তবে আগস্ট থেকে অভিযোগ বেড়েছে। আগস্টে ৫৪ হাজার অভিযোগ এলেও সেপ্টেম্বরে অভিযোগ এসেছে ৭৫ হাজারের মতো। অক্টোবর ও নভেম্বরে অভিযোগ এসেছে ৭০ হাজার ও ৬৩ হাজারের মতো। এত অভিযোগ এলেও খুব বেশি অভিযোগের সুরাহা হচ্ছে না। অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে অভিযোগগুলো জানিয়ে দিয়ে সুরাহা করতে বলা হয়।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রত্যেক গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত করা হবে। টাওয়ার কোম্পানিগুলো নিয়ে কিছু জটিলতার কারণে এতদিন নেটওয়ার্কে কিছু সমস্যা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে তারা কাজ শুরু করেছে। এ মাসেই ৫০০ টাওয়ার বানাবে তারা। পাশাপাশি তাদের সঙ্গে স্পেকট্রাম কেনার বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে। শিগগিরই তারা আরো কিছু স্পেকট্রাম কিনবে।
বাংলাদেশে যেখানে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে এক মেগাহার্জ স্পেকট্রাম দিয়ে সেবা দেওয়া হয়, সেখানে উন্নত দেশগুলোতে ১ লাখ মানুষের জন্য এক মেগাহার্জ স্পেকট্রাম বরাদ্দ রাখা হয়। ফলে কিছু জটিলতা ছিল। সেই জটিলতাগুলোর সুরাহা হয়ে যাচ্ছে। এখন থেকে সেবার মান আরো উন্নত হবে, পাশাপাশি মানুষের অভিযোগও কমে যাবে।
এর আগে গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে দেশে অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ওই সময়ের আগে গ্রাহকদের হাতে থাকা সচল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। অবৈধ মোবাইল সেট বন্ধ ও বৈধ সেটের নিবন্ধনে ডিসেম্বরে বিটিআরসির সঙ্গে চুক্তি করে দেশীয় প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি। চুক্তি অনুযায়ী ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেম চালু করতে হবে সিনেসিসকে।
বিটিআরসি প্রধান বলেন, যে সেটগুলো গ্রাহকের হাতে আছে তাদেরকে ডিসটার্ব না করে কাজটি করতে চাই। যে সেটগুলো চালু আছে তাদের ইনকরপোরেট করে নেব, সে সুযোগ দেব। নতুন যেগুলো আসবে সেগুলো অবশ্যই নিবন্ধন হয়ে আসতে হবে। আমরা সেই প্রক্রিয়ায় যাব, আমরা গ্রাহকদের কোনো সমস্যায় ফেলতে চাই না। আগামী ১ জুলাই থেকে অবৈধ সেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বলেন, আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। সেট বৈধ কি না তা এখন যাচাই করা যাচ্ছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি প্রতিটি অপারেটর ম্যানুয়ালি আমাদের জানাবে নতুন কোন সেট তাদের নেটওয়ার্কে আছে। এগুলো ম্যানুয়ালি অননেট চেক করে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে জানাবে সেটটি বৈধ না অবৈধ। বাকিগুলো যেটা অপারেশন করে বন্ধ করা হবে সেটি ১ জুলাই থেকে অনলাইন করা হবে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া শুরু হলে অবৈধ হ্যান্ডসেটে প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট একটি সিম ছাড়া অন্য কোনো সিম কাজ করবে না। নির্দিষ্ট সময় পরে কোনো সিমই কাজ করবে না। ফলে গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই নকল বা অবৈধ হ্যান্ডসেট ব্যবহার বন্ধ করবেন।