শহর ছাড়িয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে তথা গ্রামেও পৌঁছে গেছে। তবে মান ও দামের দিক থেকে অনেক তারতম্য রয়েছে। গ্রাম ও শহরে ইন্টারনেটের দামের তারতম্য নিরসনে পদক্ষেপ নিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ভৌগলিক বৈষম্য দূরে করে প্রান্তিক পর্যায়ে সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চালু হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ‘এক দেশ এক রেট’ ট্যারিফ। কিন্তু দেশের বহুল প্রতীক্ষিত ‘এক দেশ এক রেট’ ট্যারিফ চালু হলেও তা বাস্তবায়নে মুখ দেখছেনা ।
আমরা অনেকেই বাসা-বাড়ি বা অফিসে ইন্টারনেট ব্যবহার জন্য ওয়াইফাই এর সংযোগ নিয়ে থাকি। আমাদের ওয়াইফাই এর বিল আমাদের ইন্টারনেটের গতির ওপর ভিত্তি করে দিতে হয়। আবার ঢাকায় সিটি কর্পোরেশান এলাকার বিল এবং ঢাকার বাইরের কোন এক ইউনিয়ন এলাকার ইন্টারনেটের বিলের মধ্যেও আমূল পার্থক্য। এসব পার্থক্য সড়িয়ে ফেলতে এবং যাতে দেশের সবখানেই ইন্টারনেট পৌছে যায় সেটা নিশ্চিত করতেই গত মাসেই এক দেশ এক রেট এর ঘোষণা দেওয়া হয়। আদেশ দেওয়া হয় যেন সকল আইএসপি নির্ধারিত দামে নির্ধারিত ব্যান্ডউইথ প্রদান করে।
এই মূল্য ছিল ৫ এমবিপিএস অর্থাৎ ৫ মেগাবিট পার সেকেন্ড গতির দাম হবে ৫০০ টাকা, ১০ এমবিপিএস এর দাম হবে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ২০ এমবিপিএস এর দাম হবে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। আরও বলা হয় যে এই নির্ধারিত দামের চাইতে কম দামেও ইন্টারনেট সেবা দেওয়া যেতে পারে কিন্তু এর চাইতে বেশি বিল করা যাবে না। তবে আসলে এটা কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে? আমরা কী ঠিকমত এই সেবা পাচ্ছি? আমরা কী আদৌ এই সেবা পাব? তবে চলুন জেনে নেই এর সম্পর্কে বিস্তারিত।
আমরা দেশের বেশ কিছু এলাকার কয়েক হাজার মানুষদের নিয়ে এক সার্ভে করেছি। এবং সেই সার্ভের ফলাফল আপনাদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি। ফলাফল টা বেশ আতংকিত ছিল। আমাদের সার্ভেতে যারাই অংশ নিয়েছিল তারা সবাই বলেছে যে তাদের ঐখানে পূর্বের দামেই পূর্বের সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। তবে যেহেতু আমরা তুলনামূলক ভাবে কম সংখ্যক মানুষদের নিয়ে সার্ভে করেছি তাই য়ামরা ধরে নিতে পারি যে ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ সেবা পাচ্ছে না।
আসলে আমাদের ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা বিষয়টা কেন বাস্তবায়িত করছে না সেটা এখনো জানা যাচ্ছে না। এক দেশ এক রেট নাহয় পরে আসুক। যেখানে ৪ মেগাবিট পার সেকেন্ড গতি দেওয়ার কথা সেখানে এখনও ৪ মেগাবিট ঠিকমত পৌছাতেই পারে না। আর রাত হলে কারোর লাইনে ব্যন্ডউইথ প্রচুর বেড়ে যায় আবার কারোর কমে যায়। আবার আমাদের অনেকের ডিএনএস সার্ভার এতই বাজে যে সাধারণ একটি টেক্সট এডিটর ডাউনলোড করতে গেলেও আমাদের ডিএনএস সার্ভার সেখানে কানেক্ট করতে দিচ্ছে না। আমি প্রোগ্রামিং এর জন্য ব্যক্তিগত ব্যবহারে সাবলাইম টেক্সট ব্যবহার করি। কিন্তু যখনই আমি তাদের ওয়েবসাইট এ যেতে চাই ওয়াইফাই এর সংযোগ থাকলে আমাকে সেখানে যেতেই দেয় না। কিন্তু সিমের মোবাইল ডাটা থাকলে ঠিকই যেতে দেয়। আর তাই মাত্র একটি টেক্সট এডিটরের ওয়েবসাইট এ যেতে হলেও ভিপিএন ব্যবহার করতে হচ্ছে। তবে ভিপিএন কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে আরেক লেখায় বিস্তারতি আলোচনা করব। আর অনেকেরই অনেকরকম ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করতে সমস্যা হয়।
লেখক: সাকীফ মুশফিক