ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ওয়েবসাইটে ‘আপত্তিকর’ কন্টেন্ট অপসারণ ও ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে বিশেষ সেল গঠন করেছে বিটিআরসি। নবগঠিত ‘সাইবার সিকিউরিটি সেল’ এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী’সহ বিভিন্ন রকম ‘আপত্তিকর’ কন্টেন্ট সব সময় নজরদারিতে রাখতে চায় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
পাশাপাশি সামাজিক, রাজনৈতিক, পর্নগ্রাফিক, সাংস্কৃতিক কিংবা ধর্মীয় বিষয়ে উসকানিমূলক ও উগ্রবাদী কন্টেন্টও সার্বক্ষণিক নজর রাখতে কাজ করবে এ সেল।এর আগে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা নিয়মিতভাবে ‘আপত্তিকর’ কন্টেন্ট অপসারণে অনুরোধ জানালে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিত বিটিআরসি। এখন থেকে এ সেলের মাধ্যমে স্বউদ্যোগে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে কাজ শুরুও হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাইবার জগতের কনটেন্ট মনিটরিং ও ব্যবস্থাপনায় ‘সাইবার সিকিউরিটি সেল’ গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা কাজ শুরু করেছি। খুব শিগগির ২৪ ঘণ্টা এ সেল কাজ শুরু করবে।”
এ সেলের কাজ পরিচালনায় নতুন কোনো প্রযুক্তির প্রয়োজন হবে কি না বা কেনা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আগামীতে আমরা এ উদ্যোগ নেব, তবে এসব প্রযুক্তি বেশি দামের হবে না। খুব সহজেই পুরো কাজ আমরা শুরু করতে পারব।”
নজরদারি করা গেলেও বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়াসহ অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে কন্টেন্ট অপসারণ নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। কেননা কমিশন বা সরকার চাইলেও সেসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়ম-নীতির বাইরে কোনো পদক্ষেপ নিতে চায় না।
সোমবার এ নিয়ে নিজেদের ‘অসহায়ত্বের’ কথাও বলেছেন টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। নতুন সাইবার সিকিউরিটি সেল এর দায়িত্বপ্রাপ্ত বিটিআরসির ঊধর্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, “প্রাথমিকভাবে কমিশনের ১০ জন কর্মকর্তা এ সেলের দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। আগামীতে আরও বড় পরিসরে কাজ শুরু হবে। বিটিআরসি কোনো আপত্তিকর কন্টেন্ট পাওয়া মাত্র স্বউদ্যোগে ব্যবস্থা নেবে।”
এর আগে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ২০১২ সালে একটি বিশেষ দল গঠন করেছিল বিটিআরসি। বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিডি-সিএসআইআরটি) নামে এই সেল ওই সময় থেকে কাজ শুরু করলেও তা কয়েক বছর পর আর তেমন কার্যকর ছিল না।
রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায়- এমন ওয়েবসাইটে এসব বিষয় শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়াই ছিল ওই দলের মূল কাজ। বিডি-সিএসআইআরটি এর বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, “লোকবল বিশেষ করে সাইবার বিশেষজ্ঞ না থাকায় কয়েক বছর পর সেই টিমটি আর এগিয়ে যেতে পারেনি।”
নতুন এই সেলের কার্যক্রম সম্পর্কে ওই কর্মকর্তা বলেন, “বিটিআরসি থেকে ১০ জন কর্মকর্তা থাকলেও এই সেলে মোবাইল ফোন অপারেটরসহ অন্যান্য অপারেটর থেকে সদস্য নেওয়া হবে, যারা সাইবার অপরাধ বা এসব বিষয়ে অভিজ্ঞ। “সবার মতামত নিয়েই এ সেল কাজ করবে। কোনো বড় ঘটনা সামনে এলে সে সময় যাতে সবাই একযোগে কাজ করা যায় তাই এই উদ্যোগ।”