বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর হিসেবে থ্রিজি সেবা থেকে সরে আসার সময়সীমা নির্ধারণ করেছে রবি। ফোরজি সেবাকে আরো শক্তিশালী করতে ২০২৩ সালের মধ্যে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তি পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল অপারেটরটি। এই প্রক্রিয়াটি চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নওগাঁ এবং নাটোর থেকে শুরু হবে।
প্রতিনিয়ত ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ সত্ত্বেও ফোরজি সেবা আগামী কয়েক দশক ধরে আদর্শ মানদ- হিসেবে বিবেচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। থ্রিজি নেটওয়ার্ক থেকে সরে আসার ব্যাপারে রবি’র এই দূরদর্শী সিদ্ধান্ত এই বাস্তবতারই একটি প্রতিফলন।
থ্রিজি প্রযুক্তি থেকে সরে আসার প্রক্রিয়ায় রবি’র নিয়মিত ভয়েস সেবাগুলো প্রভাবিত হবে না। যে অঞ্চলগুলোতে এই প্রক্রিয়াটি শুরু হবে সে অঞ্চলের যেসব গ্রাহকের মোবাইল ডাটা এখনও থ্রিজি নেটওয়ার্কে সীমাবদ্ধ রয়েছে তাদেরকে রবি থেকে পর্যায়ক্রমে ফোরজিতে উন্নীত হওয়ার জন্য অবহিত করা হবে। রবি গ্রাহকদের জন্য ফোরজি সিমের সঙ্গে স্মার্ট হ্যান্ডসেটের অফার দেবে। যেসব গ্রাহকরা থ্রিজি বদলে ফোরজি সিম নেবেন তাদের জন্য ফোরজি ডিভাইস বান্ডেল অফারের পাশাপাশি আকর্ষণীয় মূল্যের পণ্য এবং সেবা অফার করবে রবি। থ্রিজি গ্রাহকদের এসএমএসের মাধ্যমে ফোরজি সেবায় উন্নীত হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা সরাসরি দেয়া হবে।
থ্রিজি থেকে সরে আসার মাধ্যমে রবি তার নেটওয়ার্ক অবকাঠামো-সম্পদ আরও বড় পরিসরে ব্যবহার করতে পারবে। এর ফলে ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় রবি গ্রাহকদের আরও কার্যকর, দ্রুততর এবং সর্বোত্তম ডাটা অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পারবে। এছাড়া কোম্পানিটি থ্রিজিতে বরাদ্দকৃত সকল ডাটা নেটওয়ার্ক সম্পদ এখন ফোরজি নেটওয়ার্কে ব্যাবহার করতে পারবে। এর ফলে আরও বিস্তৃত কভারেজ, উন্নত নেটওয়ার্ক এবং রবি নেটওয়ার্কে শক্তিশালী ট্রাফিক বহন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
রবি নেটওয়ার্কে থ্রিজি ডিভাইসের সংখ্যা হ্রাস এবং ফোরজি ডিভাইসের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলস্বরূপ, টুজি ও থ্রিজি নেটওয়ার্কে চাপ কমছে এবং রবি ফোরজি নেটওয়ার্কে দ্রুত বর্ধমান ট্রাফিকের সম্মুখীন হচ্ছে। ডিভাইস পছন্দের ক্ষেত্রে এ পরিবর্তন সমৃদ্ধ ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে উন্নততর সেবা প্রদানের সুযোগ এনে দিচ্ছে। বিশ্ব পরিসরে একই ধরণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে টুজি এবং ফোরজি প্রযুক্তি আরও দীর্ঘমেয়াদে থাকবে। কিন্তু থ্রিজি পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
রবি ইতিমধ্যে ১৪ হাজারের বেশি ফোরজি সাইট চালুর মাধ্যমে ৯৮ শতাংশ জনসংখ্যাকে নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে। প্রায় দুই কোটি ফোরজি গ্রাহক নিয়ে টেলিকম শিল্পে সবচেয়ে বেশি হারে (৭২ দশমিক ৪ শতাংশ) ডাটা ব্যবহারকারী রয়েছে রবির। ডিজিটাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রবি’র ভিশন নির্ভর করছে ফোরজি’র উপর। এই ঘোষণার মাধ্যমে ডিজিটাল কোম্পানি হিসেবে রবি’র ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা আরো স্পষ্ট হবে।