ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ‘এক দেশ এক রেট’ প্যাকেজ চালুর নির্দেশনার এক মাস পর দাম বাড়াতে চায় দেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) গত ৫ অক্টোবর নির্দেশনা দেয়- ১ দিন সেবা বিঘ্নিত হলে ৫০ শতাংশ, ২ দিনে ৫০ শতাংশ এবং ৩ দিন বিঘ্নিত হলে গ্রাহক কোন মূল্যই দিবে না। তবে ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা এ নির্দেশনা মেনে নিতে নারাজ। এ কারণে বিটিআরসির কাছে ‘এক দেশ এক রেট’ প্যাকেজের দাম পুণঃনির্ধারণ ও বেশকিছু বিষয়ে নতুন একটি প্রস্তাবনা দাখিল করেছে ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন আইএসপিএবি।
আইএসপিএবি সংগঠনের পক্ষ থেকে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘এক দেশ এক রেট’ বাস্তবায়নে জটিলতা এবং অপারগতা শিরোনামে ১নং প্যারায় ১৪ আগষ্ট বিটিআরসি কর্তৃক প্রকাশিত এক নোটিশের বরাত দিয়ে বলা হয় ওই চিঠিতে প্রথমে আইএসপিদের জন্য যে ট্যারিফ প্রবর্তন করে সেখানে যথাক্রমে ৭দিন সেবা বিঘ্নিত হলে ৫০ শতাংশ ১৪ দিনে ২৫ শতাংশ এবং ২০ দিন বিঘ্নিত হলে গ্রাহক কোন মূল্যই প্রদান করবে না।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই গ্রেড অফ সার্ভিস বিবেচনা করে আইএসপিদের পক্ষে ৫ এমবি ৫০০ টাকা, ১০ এমবি ৮০০ টাকা এবং ২০ এমবি ১২শ’ টাকায় প্রদান করা সম্ভব ছিল। কিন্তু ৫ অক্টোবর বিটিআরসি কর্তৃক প্রকাশিত এক নোটিশে বর্ণিত শর্তানুযায়ী গ্রেড অফ সার্ভিস প্রদানের ক্ষেত্রে ‘এক দেশ এক রেট’ ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাবনা হলো ২ এমবি ৫০০ টাকা, ৫ এমবি ৮০০ টাকা এবং ১০ এমবি ১২শ’ টাকা পুণঃনির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গে আইএসপিএবি মহাসচিব ইমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এক দেশ এক রেট’ প্যাকেজ চালুর সময় টাকার শর্ত না দেওয়ায় আমরা রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু যখনই প্যাকেজে টাকার শর্ত জুড়ে দেওয়া হলো, তখন দেখলাম এই নির্দেশনা মানা অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব। কারণ এনটিটিএনগুলোর ভু-গর্ভস্থ ক্যাবল কাটা পড়লে ২ থেকে ৩ দিন লাগে। এখানে আইএসপিদের কিছুই করার থাকে না। গ্রাহকরা ইন্টারনেট পায় না।
তিনি বলেন, সিমিউ-৪, সিমিউ-৫ সাবমেরিন ক্যাবল এবং ভারত থেকে স্থল পথে আসা আইটিসির ব্যান্ডউইথের ওপর নির্ভরশীল। এরমধ্যে বছরে প্রায় ৪ বারের মতো সিমিউ-৪ মেইনটেনেন্স করতে হয়। এতে দুটি গেটওয়েতে চাপ পড়লে ২-৩ দিন ইন্টারনেট সংযোগে ব্যাঘাত ঘটে। এর পেছনে আইএসপিএবি কোনো হাত নেই। এসব কারণে পুরোমাসের টাকা গ্রাহকের কাছে জরিমানা দিতে হয়, তাহলে আমরা ব্যবসা করতে পারবো না। এই বিষয়গুলো পুনরায় বিবেচনা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
আইএসপিএবি সংগঠনের পক্ষ থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র।