টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ফোর-জি ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধিতে নতুন মানদণ্ড নির্ধারণের পরিকল্পনা করছে। দেশের মানুষের উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মোবাইল ইন্টারনেটের ন্যূনতম গতি ১৫ এমবিপিএস ও ব্রডব্যান্ডের ২০ এমবিপিএস নিশ্চিত করা হবে।
গত ১২ অক্টোবর এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির প্রতিনিধি এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান মানদণ্ড অনুযায়ী, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ও মোবাইল ইন্টারনেটের ন্যুনতম গতি যথাক্রমে ১০ ও ৭ এমবিপিএস।
সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল ফোন অপারেটররা ন্যূনতম গতি বজায় রাখতে না পারলে তাদের ব্রডব্যান্ড ও ফোর-জি সেবাদাতা হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হবে না। গতির নতুন মানদণ্ড বাস্তবায়ন করতে বিটিআরসি একটি কমিটি গঠন করেছে।
কমিটি সব সেবাদাতার সঙ্গে আলোচনা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে প্রতিবেদন আকারে একটি প্রস্তাব জমা দেবে। ওই প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরে বিটিআরসি ইন্টারনেটের গতির নতুন মানদণ্ডের আনুষ্ঠানিক আদেশ দেবে।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে আগস্টের শেষে ১১ কোটি ৫৪ লাখ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং ১ কোটি ১০ হাজার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিলেন।
২০১৮ সালে বিটিআরসি ব্রডব্যান্ডের ন্যূনতম গতির মানদণ্ড ৫ এমবিপিএস থেকে বাড়িয়ে ১০ এমবিপিএস করে। তারপরও, সারা দেশে অনেক গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা থেকে ন্যূনতম গতি পাচ্ছেন না।
প্রকৃতপক্ষে, ২০২১ সালের ডিজিটাল কোয়ালিটি অব লাইফ সূচক অনুযায়ী— মোবাইল ইন্টারনেট সেবার গতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ ১১০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিচে অবস্থান করছে। এই সূচক প্রকাশ করেছে খ্যাতিমান ভিপিএন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সার্ফশার্ক। সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১০৩।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমএ হাকিম জানান, বিটিআরসি তাদের সঙ্গে মানদণ্ড উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানিয়ে দিয়েছি, নতুন মানদণ্ড বাস্তবায়নের জন্য ইন্টারনেট সেবাদাতাদের ২ বছর সময় লাগবে।’
তিনি আরও জানান, ট্রান্সমিশনের খরচ অনেক বেশি হওয়ায় দেশজুড়ে সেবা দিচ্ছে এমন আইএসপিগুলো এখনো ইউনিয়ন পর্যায়ে তাদের সেবা পৌঁছে দিতে পারেনি।
হাকিম জানান, আইএসপিরা এই মুহূর্তে গ্রাহক পর্যায়ে দেশের সব জায়গায় একই মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ৩০ শতাংশে এবং ২০২৩ সালের মধ্যে ৬০ শতাংশে উন্নীত করা। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর বর্তমান হার ৮ শতাংশ।