দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে রিচার্জের বা লোডের কার্ড বিক্রির সময় অতিরিক্ত এক থেকে দুই টাকা আদায় করে আসছেন রিটেইলাররা। এ ধরনের অর্থ আদায় নৈতিকতা বিরোধী, বলছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে সোচ্চার বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বেশকিছু দিন আগ থেকে রিটেলারদের জোরপূর্বক অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রতিবাদ করে আসছিলাম। কিন্তু দিনকে দিন তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। আগে এক টাকা নিলেও এখন কোনো কোনো গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত দুই টাকা নেওয়া হচ্ছে।
গ্রাহকের কাছ থেকে বিশাল অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে রিটেইলাররা জানিয়ে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, দেশে এই মুহূর্তে মোবাইল রিচার্জের জন্য রিটেইলার রয়েছে প্রায় ৯ লাখ। গড়ে একজন রিটেইলার দৈনিক আই-টপের মাধ্যমে খুচরা পর্যায়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন গ্রাহকের রিচার্জ করে থাকে। দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন অজুহাতে রিটেইলাররা অনুমানিক দৈনিক ৯০ লাখ টাকা অনৈতিকভাবে আদায় করে নিচ্ছে। যা মাসে গিয়ে দাঁড়ায় ২৭ কোটি টাকা, বছরে প্রায় ৩২৪ কোটি টাকা।
মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, রিটেলাররা দাবি করছে কোম্পানি থেকে কম কমিশন পেয়ে থাকেন। বর্তমানে বেশিরভাগ গ্রাহক মোবাইল ব্যাংকিং এবং অ্যাপসের মাধ্যমে রিচার্জ করার কারণে আগের চাইতে ব্যবসা এখন অনেক কম হচ্ছে। তাছাড়া টাকা ভাংতি না থাকাও অন্যতম অজুহাত। আর গ্রাহকরা বলছেন, রিটেইলারদের সাথে এ নিয়ে অতীতে ঝগড়া বিবাদ করা হলেও এখন আর করা হয় না। তাছাড়া, অপারেটরদের প্যাকেজগুলো হয় বিজোড় সংখ্যার, এই সুযোগটাও নিচ্ছে রিটেইলাররা।
এ ধরনের অর্থ আদায় আইনবিরোধী। এই অনৈতিক লেনদেনের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি ও টেলিকম অপারেটররা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে বলে মনে করেন মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, গ্রামীণফোন ২০ টাকার নিচে রিচার্জ না করা শর্ত দিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের গ্রাহকরা সমস্যায় পতিত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে রিটেলাররা এই ২০ টাকা রিচার্জ করার জন্য অতিরিক্ত দুই টাকা চাইতে পারে। তাই জনস্বার্থে রাষ্ট্রের বিশাল অংকের অর্থ অপচয় এবং অনৈতিক লেনদেন বন্ধে সরকার-কমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে আশা করছি।