দেশে ১৯ কোটির বেশি মোবাইল গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছেন টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (১১ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘টেলিযোগাযোগ খাতে বাজারে প্রতিযোগিতা, মুঠোফোন গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষায় করণীয়‘ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান বলেন, মার্কেটে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার জন্য কমিশন কাজ করবে। আগামী মাসে আমরা গণশুনানি অনুষ্ঠিত করতে যাচ্ছে। যা হবে আটটি বিভাগে। এছাড়াও অনলাইনে শুনানি অনুষ্ঠিত করা হবে। গ্রাহকদের অভিযোগ ও করণীয় বিষয়ক সুপারিশ কমিশনের কাছে উপস্থাপন করার জন্য মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্স সেন্টার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, গ্রামের মানুষ নেটওয়ার্কের দুর্বলতা থাকলেও ব্যবহার করতে পেরেই খুশি। কিন্তু স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাইলে নেটওয়ার্কের গতি বৃদ্ধির বিকল্প নেই।
গ্রামীণফোনের সিনিয়র ডিরেক্টর হোসেন সাদাত বলেন, অপারেটরদের অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এখানে কোনো একটি অপারেটর বেশি সুবিধা নিচ্ছে একথা ঠিক না। মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকটি অপারেটরের বিজনেস পলিসির কারণেই তারা অগ্রগামী হয়। আর ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই তারা পিছিয়ে যায়। আমরা উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
রবি আজিয়াটার ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ মো. ফজলে হুদা বলেন, ৫৭ শতাংশ রাজস্ব সরকারকে দিতে হয়। আর মাঝখানের কিছু অপারেটরদেরকে বা মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দিতে হয় ২১ শতাংশ। ২৬ থেকে ২৭ টাকার মধ্যে আমাদের অপারেশন পরিচালনা করতে হয়। এর মধ্যে যদি অসামঞ্জস্যপূর্ণ বাজার ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে তাহলে দুই-একটি অপারেটর ঝরে পড়লে বাজারে মনোপলি প্রতিষ্ঠা হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই নিয়ন্ত্রন কমিশনকে খুব দ্রুতই এসএমপি বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বাংলালিংকের চিফ রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স তৈমুর রহমান বলেন, ছোট অপারেটর হিসেবে আমরা খুব চাপে আছি। আমাদের প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ এবং স্ট্রাগল করতে হচ্ছে। এসএমপি বাস্তবায়িত হলে আমাদের সুবিধার পাশাপাশি নতুন করে বিদেশি বিনিয়োগ বা অন্য অপারেটর ব্যবসায় আসতে উৎসাহিত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, একসময় সিটিসেল বাজারে মনোপলি করতো। এরপর গ্রামীণ টেলিকম ইনকামিং এবং আউটগোয়িং উভয়কলে ১০ টাকা করে চার্জ নিত। আবারো সেই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একটি অপারেটর ৫২ শতাংশ বাজার দখল করে আছে আর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ৩.৫ শতাংশ বাজার দখল করে আছে। এই বৈষম্যের কারণেই নতুন করে বিদেশি বিনিয়োগ বা দেশি বিনিয়োগ আসতে চাচ্ছে না টেলিকম খাতে।