সিমের ওপর থেকে কর প্রত্যাহার করে এবং মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) সেবা সহজলভ্য করলে রাজস্ব আয় ও গ্রাহকসেবা—উভয়ই বাড়বে বলে মনে করে এমএনপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়ন।
সমান লাইসেন্স ফি দিয়ে অনুমোদিত এ সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের দাবি, গ্রাহক পর্যায়ে সেবাটি গ্রহণে যেসব নীতিগত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা তুলে নেওয়ার দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র। প্রতিষ্ঠানটির মতে, এটি করলে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে এবং ব্যবহারকারীর স্বাধীনতাও নিশ্চিত হবে।
কর্মশালায় আরও বলা হয়, ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) সুরক্ষায় মাস্কিং বাধ্যতামূলক করতে হলে এমএনপি বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া জরুরি। এর মাধ্যমে অননেটের পাশাপাশি অফনেট এসএমএসেও মাস্কিং চালু করা সম্ভব হবে।
ইনফোজিলিয়নের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়, গাইডলাইনের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে এটুআপি (এটুপি) নীতিমালা নির্ধারণ করে তা আইআইজির (আআইজি) মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা গেলে আন্তর্জাতিক এসএমএস থেকেও রাজস্ব বাড়ানো সম্ভব।
মঙ্গলবার রাজধানীর রাওয়া কমপ্লেক্সে ‘মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি): চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় ইনফোজিলিয়নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন বলেন, “গ্রাহকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, কিন্তু নানা বিধিনিষেধে সেই স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাধাগুলো দূর করা গেলে পরোক্ষভাবে সরকারের রাজস্বও বাড়বে, পাশাপাশি গ্রাহক পাবে সর্বোত্তম সেবা।”
ইনফোজিলিয়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তফা কামাল বলেন, “দেশীয় এটুআপি উদ্যোক্তারা মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না, কারণ অপারেটররাই সরাসরি গ্রাহকদের কাছে মেসেজ পাঠাচ্ছেন।”
তিনি যোগ করেন, ভারতে রেগুলেটর-সমর্থিত পরিবেশে এমএনপি সাফল্য পেয়েছে, বাংলাদেশেও সে রকম সমর্থন দরকার।
ইনফোজিলিয়নের টেকনিক্যাল লিড ওবায়দুল ইসলাম জানান, বিশ্বের ৭২তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এমএনপি চালু হলেও প্রথম বছরে যেখানে সাত লাখ গ্রাহক এ সেবা গ্রহণ করেছিলেন, পরবর্তী ছয় বছরে সেই সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃদ্ধি ঘটেনি। বর্তমানে ৯৭ শতাংশ গ্রাহক এমএনপি সেবা ব্যবহার করছেন না, যার প্রধান কারণ—বিভিন্ন রেগুলেটরি বাধা।
তিনি জানান, ইনফোজিলিয়ন বর্তমানে এটুআপি এগ্রিগেটর ও এসএমএস ডিপিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে টেলিকম সেবার মান ধরে রাখতে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইনফোজিলিয়নের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাজ্জাদ হোসাইন মজুমদার, হেড অব সার্ভিস আসিফুর রহমান এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রিফাত হাসান।