ডিপ ফেইক নামের মধ্যেই এর কাজ লুকিয়ে আছে।ডিপ শব্দের অর্থ গভীর এবং ফেইক শব্দের অর্থ নকল।আর দুইটা এক হয়ে গেলে অর্থ অনেকটা এমন হয় যে কোনকিছুকে গভীরভাবে নকল করা হয়েছে।তাহলে নিশ্চয় মনে প্রশ্ন জাগছে যে ডিপ ফেইক দিয়ে তাহলে কিসের নকল করা হয়?আপনি হয়ত ভেবেছেন যে এই নকল হয়ত স্বাক্ষর নকল করার নকল হতে পারে।কিন্তু ব্যাপারটা আসলে অন্যরকম।এই ডিপ ফেইক প্রযুক্তি মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার উপর ভিত্তি করে বানানো।এটি দিয়ে প্রায় নিঁখুতভাবে অন্য কাউকে নকল করা যায়।মানে ধরুণ আপনি যদি কখনো কোনদিনও খুন বা অন্যকোন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ না করে থাকেন তাহলেও এই ডিপ ফেইক প্রযুক্তি দিয়ে আপনাকে অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করার প্রায় নিঁখুত চেষ্টা করা যেতে পারে।
এইবার জেনে নেই যে এটি আসলে কিভাবে কাজ করে।অর্থাৎ এই প্রযুক্তির কাজ করার পদ্ধতি কী?এই প্রযুক্তিতে দুইটা রোবট বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হয়।একটা রোবট আপনার বা যার নকল করা হবে তার কয়েক হাজার ছবি তুলে আর একটা সিমুলেটর তৈরি করে।আর এই সিমুলেটরে আপনি নিজের ইচ্ছা মত কাজ করাতে পারবেন। আর পরের রোবটটি শুধু যাচাই করবে যে আপনার নতুন ভিডিও বা ছবি আগেরটার চেহারার সাথে কতটুকু মিলছে।যদি অনেকটুকু মিলে যায় তবেই সেটি আউটপুট হিসেবে আপনার নতুন ভিডিও দিবে নাহলে বার বার চেষ্টা করেই যাবে।আর কন্ঠ নকল করার প্রযুক্তি তো আগেই বানানো হয়ে গেছে।তাই সহজেই এটি রাজনৈতিক ক্ষেত্র সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করে বিভ্রান্ত করা সম্ভব।
আপনি কি এই লেখা পড়ার সময় খেয়াল করেছেন যে আমি একবারও বলি নি যে এটা দিয়ে সম্পূর্ণ নিঁখুত ছবি বা ভিডিও বানানো যাবে।অর্থাৎ যদি ডিপ ফেইকে করা কোন ভিডিও বা ছবিকে গভীর ভাবে যদি রোবটকে দিয়ে বিশ্লেষণে করা যায় তাহলে দেখা যাবে আসলে সেই ছবিটি নকল।তাই আপনি যদি এই ডিপ ফেইককে অপরাধমূলক কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি কিন্তু মোটেও বেঁচে যাবেন না।কারণ আপনি যখন কোন ছবি বা ভিডিও ধারণ করেন বা তৈরি করেন ক=তখন আপনার ফোন সেই ছবি বা ভিডিওর সোর্স হিসেবে চিহ্নিত করা হয় আর এই সোর্সের ঠিকানা দিয়ে আপনাকে প্রশাসন বেশ সহজেই ট্র্যাক করে ফেলবে।সুতরাং বাঁচার কোন উপায় নেই।
এতক্ষণ আপনারা শুধু এই ডিপ ফেইকের খারাপ দিকটাকে দেখলেন।এইবার জেনে নিন এর কিছু ভাল দিক। ডিপ ফেইক যেহেতু সাধারণ চোখে ধরা পরে না তাই আপনাকে সহজেই বিভ্রান্ত করা যাবে।এমনটা না বলে বলা যায় আপনার পছন্দের কোন তারকা যদি মৃত্যু বরন করে থাকেন তাহলে তাঁর ছবি দিয়ে নতুন নতুন ভিডিও বা ছবি নির্মাণ করা সম্ভব তবে অবশ্যই সেই তারকার অনুমতি নিয়ে এটি করতে হবে কারণ যদি আপনি অনুওতি না নিয়েই কারও ডিপ ফেইক করে থাকেন তাহলে আপনার বেশ বড় মাপেরই শাস্তি হতে পারে।
তাহলে সিদ্ধান্ত আপনার।আপনি চাইলেই নিজেকে এই ডিপ ফেইক এর মত জঘন্য অপরাধ থেকে দূরে রাখতে পারেন আবার চাইলেই মজার জন্য ডিপ ফেইক করে বেশ বড় মাপের শাস্তি ভোগ করতে পারেন।আর মজা করার অনেক উপায় আছে।তবে এই ডিপ ফেইক দিয়েই বা কেন মজা করতে হবে?দয়া করে এই ডিপ ফেইক থেকে আর আইনি ঝামেলা থেকে দূরে থাকুন।