দেশে মোবাইল ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর সেবা পরিবর্তন (এমএনপি) চালুর আট মাসে (অক্টোবর ২০১৮-মে ২০১৯) অপারেটর বদল করেছেন চার লাখের বেশি গ্রাহক। অপারেটর পরিবর্তনের এ সেবায় সবচেয়ে বেশি প্রায় ৭২ শতাংশ গ্রাহক গেছেন রবি আজিয়াটায়। আর নিজেদের গ্রাহক ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক। কারণ, অপারেটর ছেড়ে যাওয়া গ্রাহকের মধ্যে এ দুই কোম্পানিরই ছিল ৮০ শতাংশের বেশি।
তথ্যমতে, আট মাসে মোট চার লাখ এক হাজার ৭৩৯ গ্রাহক অপারেটর পরিবর্তন করেছেন। এর মধ্যে দুই লাখ ৮৮ হাজার ৭৯ জনই গেছেন রবিতে, যা অপারেটর পরিবর্তনের ৭১ দশমিক ৭১ শতাংশ। এছাড়া গ্রামীণফোনে গেছেন ৭৩ হাজার ৫৪৯ জন বা ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ গ্রাহক। আর আট মাসে অপারেটর পরিবর্তন করে বাংলালিংকে গেছেন ৩৬ হাজার ৮০২ গ্রাহক ও টেলিটকে গেছেন তিন হাজার ৩০৯ জন।
এদিকে আট মাসে অপারেটর পরিবর্তন করতে চেয়ে বাধা পেয়েছেন তিন লাখ ৪১ হাজার ৪৫১ জন। এর মধ্যে রবিতে যেতে চেয়ে বাধা পান সবচেয়ে বেশি। দুই লাখ ১৮ হাজার আট জন রবিতে যেতে বাধা পান। আর গ্রামীণফোনে যেতে বাধা পান ৮৭ হাজার ৯৬৮ জন। এছাড়া বাংলালিংকে যেতে বাধা পান ৩৩ হাজার ৮৩০ জন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটকে যেতে বাধা পান এক হাজার ৬৪৫ জন।
তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, আট মাসে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক বের হয়ে গেছেন গ্রামীণফোন থেকে। এ সংখ্যা এক লাখ ৬৮ হাজার ১৮৮, যা অপারেটর পরিবর্তনের প্রায় ৪১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর বাংলালিংক থেকে বের হয়ে গেছেন এক লাখ ৬১ হাজার ৩৮ জন, যা মোট পরিবর্তনের ৪০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এছাড়া আট মাসে রবি থেকে বের হয়ে যান ৬৬ হাজার ৯৫৭ জন এবং টেলিটক থেকে বের হন পাঁচ হাজার ৫৫৬ জন।
এদিকে আট মাসে গ্রামীণফোন থেকে বের হয়ে বাধার সম্মুখীন হন এক লাখ আট হাজার ৬৩ জন। তবে অপারেটর পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি বাধার সম্মুখীন হন বাংলালিংকের গ্রাহক। আট মাসে এক লাখ ৬৯ হাজার ৭৯০ গ্রাহক অপারেটর পরিবর্তন করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন। এছাড়া রবি থেকে বের হতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন ৫৪ হাজার ২০২ ও টেলিটক থেকে বের হতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন ছয় হাজার ৩৯৬ গ্রাহক।
উল্লেখ্য, মোবাইল নম্বর অপরিবর্তিত রেখে এমএনপি সেবা চালু হয় গত বছরের অক্টোবরে। তখন অপারেটর বদলে মোট ব্যয় ছিল ১৫৮ টাকা, যার কর ছিল ১০৮ টাকা। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেবাটি চালু করতে চাইলে তার জন্য দিতে হয় আরও বাড়তি ১০০ টাকা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেষ্টা করে এটি কমিয়ে ৫৮ টাকায় নামিয়ে আনে।
যদিও অপারেটররা জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের জন্য নতুন বাজেট পাসের পর তা বেড়ে ২৫৮ টাকা হয়েছে। এর মধ্যে সিম কর দাঁড়িয়েছে ২০০ টাকা এবং মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) সাড়ে সাত টাকা। এ ছাড়া বাজেটে মোবাইল অপারেটরগুলোর মোট আয়ের ওপর ন্যূনতম কর শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে দুই শতাংশ করা হয়েছে।