টিকটকের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ আশঙ্কা প্রকাশ করছে। ডাচ কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে অ্যাপটির বিরুদ্ধে শিশুদের ডাটা কীভাবে ব্যবহার করা হয়, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কলম্বিয়া কর্তৃপক্ষও একই পথে হাঁটছে। শিশু ও কিশোর ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও সেগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে অ্যাপটির বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে কলম্বিয়ার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। খবর রয়টার্স।
কভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় বিশ্বজুড়ে লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি রয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। এতে পর্যাপ্ত অবসর সময় পেয়ে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় মানুষ আরো বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে মানুষ। বিনোদনের জন্য বেছে নিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ। তেমনি একটি অ্যাপ চীনভিত্তিক বাইটডান্সের স্বল্পদৈর্ঘ্য ভিডিও তৈরি এবং তা শেয়ারের সোস্যাল প্লাটফর্ম টিকটক। আরো অনেক অ্যাপের মতো টিকটক ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশ্বজুড়ে ঘরবন্দি শিশু-কিশোরদের অনেকের সময় কাটছে মোবাইল, ট্যাব আর ল্যাপটপ-কম্পিউটারে। যাদের কাছে অ্যাপটি অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর বাইরে কয়েকশ কোটি মানুষ মজাদার স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও তৈরির এ অ্যাপ ব্যবহার করছেন।
সম্প্রতি টিকটক অ্যাপে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ফিচার যোগ করা হয়েছে। শিশুরা অ্যাপটি ব্যবহারের সময় অভিভাবকদের নজরদারির সুবিধা দিতে নতুন এ ফিচার আনে প্রতিষ্ঠানটি। ডাচ ডাটা প্রটেকশন অথরিটি (ডিপিএ) প্রশ্ন তুলেছে, শিশুদের ডাটা কীভাবে ব্যবহার করে টিকটক, তা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে। একই ধরনের প্রশ্ন তুলেছে কলম্বিয়া সরকারও। দেশটির নাগরিকদের মধ্যে যারা অ্যাপটি ব্যবহার করছে, তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা কীভাবে রক্ষা করা হচ্ছে, সেটির জন্য তদন্ত করতে যাচ্ছে দেশটি।
কলম্বিয়ার সুপারইনটেনডেন্সি অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমার্স তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নাগরিকদের মধ্যে থেকে যারা টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করছে, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য টিকটকের নীতি অনুসরণ করে এবং দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা সেটি যাচাই করতে যাচ্ছে সুপারইনটেনডেন্সি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, কলম্বিয়ার সংবিধানে শিশুদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর টিকটকের অ্যাপের মূল ব্যবহারকারীও এ শিশুরা। যে কারণে বিষয়টি আরো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তে নামছে বোগাটা।
টিকটক অ্যাপ বিশ্বজুড়ে ৫০ থেকে শতকোটি মানুষ সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করছে। শুরুতে এটি এশিয়ার গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয় হলেও বিশ্বজুড়ে এখন অ্যাপটির ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে টিকটক অ্যাপের ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে।
কলম্বিয়া সরকারের এমন উদ্যোগের বিষয়ে জানতে টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি। তবে গত সপ্তাহে কোম্পানিটি জানিয়েছিল, তারা ডাচ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তদন্তে সহযোগিতা করছে।
এর আগে গত এপ্রিলে লাইভ চ্যাট ও ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে ১৬ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের ব্লক করে দেয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত অধেয় তৈরি থেকে কিশোরদের বাধা দিতে অভিভাবকদের নজরদারির সুবিধা চালু করে প্রতিষ্ঠানটি।