২০১৫ সালেও ভারতের সাশ্রয়ী স্মার্টফোন বাজারের নেতৃত্বে ছিল স্থানীয় ডিভাইস নির্মাতা মাইক্রোম্যাক্স। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাজারটিতে ডিভাইস ব্র্যান্ডটির আধিপত্য তলানিতে ঠেকেছে। ডিভাইস বাজারে গত কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠানটির তেমন জোরালো কোনো উপস্থিতিও দেখা যায়নি। ভারতে চীনভিত্তিক ডিভাইস ব্র্যান্ড শাওমি, ভিভো ও অপোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ছিটকে পড়েছিল মাইক্রোম্যাক্স। এবার ব্র্যান্ডটি ভারতীয়দের চীনবিরোধী মনোভাব এবং নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে ডিভাইস বাজারে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। খবর ইয়াহু ফাইন্যান্স।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন বাজার ভারত। দেশটিতে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলোর চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে সাশ্রয়ী চীনা ডিভাইস ব্র্যান্ডগুলো। গত জুনে ভারত-চীনের সীমান্ত উত্তেজনার জেরে ভারতে বিভিন্ন মহল থেকে চীনা পণ্য বর্জনের ডাক উঠেছে। সোস্যাল মিডিয়ায় চীনা অ্যাপ আনইনস্টলেরও দাবি জানিয়েছিলেন অনেকে। কার্যত টিকটক, ইউসি ব্রাউজার, শেয়ারইট, বিগো লাইভ ও হেলোর মতো ৫৯টি চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে সে পথেই হাঁটে ভারতের সরকার। চীনা এসব অ্যাপকে দেশটির সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা, প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি উল্লেখ করা হয়েছিল। ভারতীয়দের এমন মনোভাবকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চাইছে মাইক্রোম্যাক্স।
ভারতীয়দের চীনা পণ্য বর্জনের ডাকের মধ্যেই শাওমি, ভিভো, অপো ও রিয়েলমির মতো অতি প্রচলিত ফোন ব্র্যান্ডগুলোর আধিপত্য কমাতে ফিরছে মাইক্রোম্যাক্স। ১৫ হাজার রুপির কম দামে মাইক্রোম্যাক্স যে ডিভাইসগুলো আনতে চলেছে, তা ভারতে চীনা ডিভাইস ব্র্যান্ডগুলোর ব্যবসায় বড় ধস নামাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক এক ভিডিও টুইটে মাইক্রোম্যাক্সের প্রতিষ্ঠাতা রাহুল শর্মা ডিভাইস বাজারে প্রত্যাবর্তনের তথ্য দেন। ওই ভিডিওতে নতুন স্মার্টফোন সিরিজ সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করেননি তিনি। রাহুল শর্মা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলেন, তখন থেকেই আমরা এটি নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাই মাইক্রোম্যাক্সের নতুন সিরিজের ফোন নিয়ে বাজারে ফিরছে। ওই ভিডিওতে নতুন একটি স্মার্টফোনের বক্স দেখিয়েছিলেন তিনি।
ভারতীয় ডিভাইস ব্র্যান্ড মাইক্রোম্যাক্সের নতুন ফোনে সাড়ে ৬ ইঞ্চির এইচডি ডিসপ্লে থাকতে পারে। ৫০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ারের শক্তিশালী ব্যাটারির ডিভাইসটির ২ গিগাবাইট কিংবা ৩ গিগাবাইট র্যাম সংস্করণে বাজারে মিলবে। এতে ৩২ গিগাবাইট অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ সুবিধা থাকতে পারে। ডিভাইসটির দাম শুরু হবে ৭০০০ রুপি থেকে। বিভিন্ন ফিচার এবং কনফিগারেশনের ওপর ভিত্তি করে ডিভাইসটির সর্বোচ্চ দাম হবে ১৫০০০ রুপি। ডিভাইসটিতে মিডিয়াটেকের পি২২, পি৩০ ও জি২৫ প্রসেসর ব্যবহার করা হবে।