আমরা অনেক ব্র্যান্ডের ফোনই তো কিনে থাকি। কিন্তু, সবসময়ই চেষ্টা করি সেটা যেনো আমাদের বাজেটের মধ্যে থাকে। মানে, বাজেট অনুযায়ী পারফেক্ট একটি স্মার্টফোন। আমাদের বাজেটের কথা চিন্তা করে যদি সর্বপ্রথম কোনো মোবাইল ব্র্যান্ডের কথা মনে আসে সেটা অবশ্যই ‘শাওমি’। কারন, এই মোবাইল ব্র্যান্ড বাজেটের মধ্যে অসাধারন সব স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ে। এ কারনেই এই মোবাইল ফোন ব্র্যান্ডটি আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তা পায়। এর ফলে বর্তমানে এই ফোনটি অনেকের প্রিয় একটি মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড। ‘শাওমি’ তাদের নতুন একটি ফোনের মডেল বের করে এই বছরের জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকে। সেই স্মার্টফোনটির মডেলের নাম হচ্ছে ‘রেডমি নোট ৯টি’। এই স্মার্টফোনটিতে ‘শাওমি’ এনেছে অনেক পরিবর্তন। আজ ‘শাওমি’র এই স্মার্টফোন নিয়েই হবে কিছু কথা। এই স্মার্টফোনটির ভিতরে কি কি আছে এবং নতুন কি কি দেয়া হয়েছে, সেসব জানানোর চেষ্টা করবো আজ।
তো চলুন কথা না বাড়িয়ে দেখে আসি, এই ফোনটির ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্যঃ⤵
বডিঃ
‘শাওমি’র এই ফোনটির বডি ডিমেনশন হচ্ছে ১৬১.২×৭৭.৩×৯.১ মি.মি.। ফোনটির মোট ওজন ১৯৯ গ্রাম। ফোনটির ডিসপ্লেতে দেয়া হয়েছে ‘গরিলা গ্লাস ৫’। যেটা অনেক শক্তিশালী ধরনের একটি গ্লাস। পিছনে দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকের লেয়ার। ফোনটির পিছনে গ্লাসের লেয়ার থাকলে ভালো হতো। যাই হোক, ফোনটিতে দেয়া হয়েছে ডুয়্যাল ন্যানো সিম স্লট। যেগুলোতে ন্যানো সিম ব্যাবহার করা যাবে।
ডিসপ্লেঃ
এই ফোনটির ডিসপ্লে হচ্ছে ৬.৫৩ ইঞ্চি। যেটা ‘আইপিএস এলসিডি’ সমৃদ্ধ। স্ক্রিন থেকে এর বডির রেশিও ৮৪.০%। ডিসপ্লের রেজুলেশন হচ্ছে ১০৮০×২৩৪০ পিক্সেলের (মাল্টিটাচ ৩৯৫ পিপিআই ডেনসিটি)। আর, গরিলা গ্লাসের প্রটেকশন তো থাকছেই।
প্লাটফর্মঃ
ফোনটির প্লাটফর্মে অপারেটিং সিস্টেমে রয়েছে ‘এন্ড্রোয়েড অএস ভার্সন ১০’ এবং ‘এমআইইউআই ভার্সন ১২’। ফোনটির প্রসেসরে রয়েছে ‘মিডিয়াটেক ডিমেনসিটি ৮০০ইউ’। যেটা, ৭ ন্যানোমিটারের ৫জি স্পিড সমৃদ্ধ শক্তিশালী একটি প্রসেসর। ফোনটির ‘সিপিইউ’তে রয়েছে ‘অক্ট্যা কোর’ এবং ‘জিপিইউ’তে রয়েছে ‘মেইল-জি৫৭’।
ক্যামেরাঃ
ব্যাকঃ ‘শাওমি’ তাদের এই ফোনটির পিছনে রেখেছে তিনটি ক্যামেরা। সেগুলো হচ্ছে ৪৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড, ২ মেগাঃ’র মেক্রো এবং ২ মেগাঃ’র ডেপথ সেন্সরের ক্যামেরা। এই ক্যামেরাগুলো দিয়ে রেকর্ড করা যাবে ৪কে রেজুলেশনের ভিডিও। আরও রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশ।
ফ্রন্টঃ ফোনটির সামনে রয়েছে ১৩ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা। যেটি দিয়ে রেকর্ড করা যাবে ১০৮০’পি রেজুলেশনের ভিডিও। এই ক্যামেরা দিয়ে হাই রেজুলেশনের ছবিও তোলা যাবে।
মেমোরীঃ
‘শাওমি’ তাদের এই ফোনটি বাজারে ছেড়েছে দুইটি ভ্যারিয়্যান্টে। সেগুলো হচ্ছে ৪/৬৪ এবং ৪/১২৮ জিবি ভ্যারিয়্যান্ট। ফোনে দেয়া হয়েছে মেমোরি কার্ড স্লট। যেই স্লটে ২৫৬ জিবি’র উপর পর্যন্ত মেমোরি কার্ড ব্যাবহার করা যাবে।
নেটওয়ার্কঃ
‘শাওমি’ তাদের এই ফোনে দিয়েছে ৫জি নেটওয়ার্ক স্পিড রেঞ্জ। যেটা এই ফোনের বিরাট একটি পরিবর্তন। ফোনটির নেটওয়ার্ক টাইপ হচ্ছে ‘জিএসএম / এইচএসপিএ / এলটিই / ৫জি। নেটওয়ার্ক ২জি’তে রয়েছে ‘জিএসএম ৮৫০ / ৯০০ / ১৮০০ / ১৯০০ – সিম১ & সিম২। নেটওয়ার্ক ৩জি’তে রয়েছে ‘এইচএসডিপিএ ৮৫০ / ৯০০ / ১৭০০ (এডব্লিউএস) / ১৯০০ / ২১০০। নেটওয়ার্ক ৪জি’তে রয়েছে ‘এলটিই’। অবশেষে নেটওয়ার্ক ৫জি’তে রয়েছে ‘এসএ / এনএসএ / সাব৬’। আরও রয়েছে ‘জিপিআরএস’ এবং ‘এজ’।
সাউন্ডঃ
ফোনটির সাউন্ড সেগমেন্ট ছিলো ভালোই ক্লিয়ার। যেকোনো ধরনের মিউজিক এই ফোনের স্টেইরো স্পিকারে লাউড দিয়ে ভালোমতোই শুনতে পাওয়া যাচ্ছিলো। থাকছে ৩.৫ মি.মি.’র ইয়ারফোন জ্যাক।
ব্যাটারীঃ
ফোনটিতে দেয়া হয়েছে ৫০০০ এমএইচের ব্যাটারী। ফোনটির বক্সেই পাওয়া যাবে ১৮ওয়াটের ফাস্ট চার্জার।
ফিচারঃ
এই ফোনটির সিকিউরিটি সেন্সর হিসেবে দেয়া হয়েছে ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’। যেটা ফোনের সাইডে, পাওয়ার বাটনে দেয়া হয়েছে। ফোনটিতে সেন্সর হিসেবে আরও রয়েছে ‘অ্যাকসেলেরোমিটার, জিওয়াইআরও, প্রক্সিমিটি এবং কম্পাস’।
যেসব পরিবর্তন রয়েছে এই ফোনেঃ
‘শাওমি’ তাদের এই ফোনে বড় যে পরিবর্তনটি এনেছে, সেটি হলো এর নেটওয়ার্ক স্পিড। এই ফোনে ৫জি নেটওয়ার্ক দেওয়াটাই ছিলো এই মডেলটির একটি পরিবর্তন।
দামঃ
বাংলাদেশে এই ফোনটির কোনো ভ্যারিয়্যান্ট এখনও আসেনি। তবে আশা করা যায় সামনের মাসে এই মডেলটি চলে আসবে। আমাদের দেশে ফোনটির ধারনাকৃত মূল্য হচ্ছে ১৯,৪০০ অথবা ২০,০০০ টাকা।