জামদানীর জন্ম জেলা নারায়ণগঞ্জে ই-কমার্সের কয়েকজন নারী উদ্যোক্তা মিলে আয়োজন করেছে “নারায়ণগঞ্জ জামদানী গ্র্যান্ড ইভেন্ট”। এতে আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন সাজের জামাই-বউ।
আজ শনিবার (৩০ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় ব্লু পিয়ার রেস্টুরেন্টে আয়োজন করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জামদানী গ্র্যান্ড ইভেন্ট। অতিথি ছিলেন কাকলি এটিয়্যার’সের স্বত্বাধিকারী কাকলি রাসেল তালুকদার, আরিয়াস কালেকশনের স্বত্বাধিকারী নিগার ফাতেমা, কন্যাসুন্দরীর স্বত্বাধিকারী মনিকা আহমেদ, তেজস্বীর স্বত্বাধিকারী উম্মে সাহেরা আনিকা সহ প্রায় ৬০ জন দর্শনার্থী।
দুপুর ১ টায় জাতীয় সঙ্গীত ও কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়েছে গ্র্যান্ড ইভেন্ট। স্বাগত বক্তব্য দেয় জাকারিয়া মবিন। এরপর ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজিব আহমেদ এবং উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশার পৃথক পৃথক ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়েছে। বড় পর্দায় জামদানীর একটি ডকুমেন্টারি দেখানো হয়েছে।
জামদানী তৈরি বিভিন্ন পোশাক গায়ে হলুদের বউ, বিয়ে বউ, ধর্মীয় বউ, বউ ভাতের বউ-জামাই সহ দৈনন্দিন জীবনে যেভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে জামদানী, তার র্যাম্প শো করা হয়েছে। এতে ছোট-বড় কয়েক শ্রেণীর মডেল অংশ নেয়। এটি ছিল ইভেন্টের মূল আকর্ষণ।
শাড়ি, পার্স, ব্যাগ, গাউন, পাঞ্জাবি, টু পিছ, থ্রি পিছ সহ বিভিন্ন জামদানী পণ্যের প্রদর্শনী দেয় সিজনস্ জন বুটিকানো, তমা’স মার্ট, উইমেনস জোন, নন্দিনী, বাংলার জামদানি ও জাহান কালেকশন অনলাইন (ফেসবুক পেজ) প্রতিষ্ঠান।
নিজ প্রোফাইলে ফেসবুক পোস্টে রাজিব আহমেদ লিখেন, ২০১৯ সালের অক্টোবরে উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) গ্রুপে জামদানি ওয়েভের ডাক দেই, তখন এসব (গ্র্যান্ড ইভেন্ট) স্বপ্নের মত ছিল। কাকলি আপু আমার সাথে জামদানি নিয়ে সময় দেয়া শুরু করেন। তখন প্রতিদিন ফেইসবুকে গালি খাচ্ছিলাম। এ নিয়ে আমার মাথা ব্যথা ছিল না এখনো নাই, কারন কিছু প্রতিষ্ঠা করতে হলে গালি এবং হাত তালি দুই পেতে হয়।
তিনি আরও লিখেন, জামদানীর গ্র্যান্ড ইভেন্টের মাধ্যমে দু’দিকে দরজা খুলে গেছে। প্রথমত, ঢাকার বাইরে দেশি পণ্য নিয়ে এমন ইভেন্ট করা সম্ভব অনেক উদ্যোক্তা বুঝতে পারছেন। দ্বিতীয়ত পণ্য ভিত্তিক ইভেন্ট করার সময় এসেছে তাও আমরা বুঝতে পারছি।
ভিডিও বার্তায় নাসিমা আক্তার নিশা জামদানী গ্র্যান্ড ইভেন্টের প্রশংসা ও সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, ভবিষ্যতে উই থেকে আপনাদের মাধ্যমে জামদানী নিয়ে এমন অসংখ্য উদ্যোগ নেবো।
ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী ফারহানা মুক্তা বলেন, জামদানী আমাদের নারায়ণগঞ্জের গর্ব ও ঐতিহ্য। আজকের গ্র্যান্ড ইভেন্টের প্রতিটি জামদানি র্যাম্প শো স্মৃতিচারণ করেছে এবং ভবিষ্যৎ চাহিদার সম্ভাবনা ফুটে উঠেছে। আমি আনন্দিত জামদানীর গ্র্যান্ড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে পেরে।
কাকলি তালুকদার বক্তব্যে বলেন, জামদানির জন্মভুমি নারায়ণগঞ্জে জামদানি নিয়ে এমন অসাধারণ একটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত। আমি আশা করবো এমন ইভেন্ট নিয়মিত এখানে (নারায়ণগঞ্জ) হবে। শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যারের মত আমিও বলতে চাই জামদানি নিয়ে প্রতিবছর একটি অনেক বড় ইভেন্ট যেন এই নারায়ণগঞ্জ হয়। যে সকল আয়োজকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজকের এই সফল ইভেন্ট হলো তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা শুধু জামদানি শিল্পের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন নি; বরং সকল দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের জন্য একটা উদাহরণ হয়ে রইলেন।
সিজনস্ জন বুটিকানোর স্বত্বাধিকারী ও ইভেন্ট আয়োজক সদস্য জান্নাত সুলতানা বলেন, নারায়ণগঞ্জ জামদানী ইভেন্ট সফল ভাবে শেষ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। জামদানী ইভেন্টে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ সহ অন্যান্য জেলা থেকে যোগ দিয়েছে অনেকে। জামদানীর প্রচার বাড়াতে নিজেদের ঐক্য ধরে রেখে বিভিন্ন উদ্যোগ নেবো।
গ্র্যান্ড ইভেন্ট আয়োজনে ওয়েব পার্টনার ছিল অনলাইন নিউজ পোর্টাল টেকজুম ডটটিভি ও রাইজিংবিডি ডটকম। মিডিয়া পার্টনার ছিল ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশন ও উদ্যোক্তা বার্তা ডটকম।
অনুষ্ঠানের শেষ অংশে জামদানী ডিজাইনে কেক কাটা হয়েছে।