মোবাইল ফোনে কল দিলেই বাজছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। কাউকে কল করলে অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসছে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। কল রিসিভ হওয়ার আগ পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে এই অংশটি।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ব্যবস্থাপনায় এটি হচ্ছে। প্রি-কল নোটিফিকেশন হিসেবে ১ থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত এটি শোনা যাবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদনক্রমে বিটিআরসি থেকে নির্দেশা দেওয়ার পর মোবাইল কোম্পানিগুলো একাজ করছে। মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকরা দিনের প্রথম ফোনকলটিতে (রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় প্রথমবার) প্রি-কল নোটিফিকেশন হিসেবে বিশেষ অংশটি শুনতে পারছেন। তবে টেলিটক প্রতি কলের শুরুতে রিং ব্যাক টোন হিসেবে কার্যক্রমটি পরিচালনা করছে।
বিটিআরসি থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রমনায় অবস্থিত রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) অনুষ্ঠিত জনসভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক এক ভাষণ। এই ভাষণে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) বাঙালিদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।
এই ভাষণটি ১৩টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের অন্যান্য শ্রেষ্ঠ ভাষণ থেকে উজ্জ্বল ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। এ ভাষণ নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে রাতারাতি সশস্ত্র করে তোলে। একটি ভাষণকে অবলম্বন করে স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ বাঙালি জীবন উৎসর্গ করেন ও কয়েক লাখ মা–বোন সম্ভ্রম বিসর্জন দেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে এ ভাষণ (বজ্রকণ্ঠ) রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত করে। বলা যায়, এই একটি ভাষণ একটি জাতি, রাষ্ট্র, বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে, যা বিশ্বে নজিরবিহীন। ইউনেস্কো এ ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ্ব ঐতিহ্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’–এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।