লন্ডনভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নাথিং তাদের প্রথম স্মার্টফোন ‘নাথিং ফোন-১’ বিশ্ববাজারে উন্মোচন করেছে গত ১২ জুলাই। ওয়ানপ্লাসের সাবেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা কার্ল পেইনের তৈরি নাথিং ফোন বাজারে আসার পরই নানা অভিযোগ ওঠে ফোনটি নিয়ে। তবে এসব অভিযোগ পেছনে ফেলে প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করে নিয়েছে নাথিং ফোন। ভারতের বাজারে বিক্রিতে রেকর্ড গড়েছে। মাত্র ২০ দিনে ১ লাখ ইউনিট ফোন বিক্রি হয়েছে। আইফোনকে টেক্কা দিতেই বাজারে এসেছে নাথিং ফোন।
নাথিং ইন্ডিয়ার জেনারেল ম্যানেজার মনু শর্মা বলেন, ফ্লিপকার্টের মাধ্যমেই নাথিং ফোন-১ মডেলটি মাত্র ২০ দিনে ১ লাখ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি উন্মোচনের পর থেকে অফলাইনেও বিক্রি হয়েছে ডিভাইসটি। স্মার্টফোনটি বাজারে আসার আগেই ১০ মিলিয়নেরও বেশি আগ্রহী গ্রাহক ‘নোটিফাই মি’ বাটনে ক্লিক করেছিলেন।
বিশ্বের প্রথম ট্রান্সপারেন্ট ফোন, ভেতরে কি রয়েছে তা বাহির থেকেই দেখা যাবে। এ জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ট্রান্সপারেন্ট ব্যাক প্যানেল।
ডুয়েল ন্যানো সিমের নাথিং ফোন ১-এ রয়েছে ১২০ হার্টজ অ্যাডাপটিভ রিফ্রেশ রেট এবং কর্নিং গরিলা গ্লাসের সুরক্ষাসহ ৬.৫৫ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস ওলেড ডিসপ্লে। রেজুলেশন ১০৮০ বাই ২৪০০ পিক্সেল। ডিভাইসটির ব্যাক প্যানেলেও কর্নিং গরিলা গ্লাসের সুরক্ষা মিলবে।
অ্যান্ড্রয়েড ১২ অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত ডিভাইসটিতে প্রসেসর হিসেবে রয়েছে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৭৭৮জি প্লাস। যার সাথে ১২ জিবি পর্যন্ত এলপিডিডিআর৫ র্যাম এবং সর্বোচ্চ ২৫৬ জিবি ইউএফএস ৩.১ স্টোরেজ সুবিধা আছে।
ফটোগ্রাফির জন্য ফোনটির ব্যাক প্যানেলে দুটি ৫০ মেগাপিক্সেলের সেন্সরসহ ডুয়েল-ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে। প্রথমটি এফ/১.৮৮ অ্যাপারচার সহ ৫০ মেগাপিক্সেলের সনি আইএমএক্স৭৬৬ সেন্সর, যা অপটিক্যাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন এবং ইলেকট্রনিক ইমেজ স্টেবিলাইজেশনের সুবিধা দেবে। আর দ্বিতীয়টি এফ/২.২ অ্যাপারচার সহ ৫০ মেগাপিক্সেলের স্যামসাং জেএন১ আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স, যা ইলেকট্রনিক ইমেজ স্টেবিলাইজেশনসহ ১১৪ ডিগ্রি ফিল্ড-অফ-ভিউ সুবিধা দেবে।
ঝকঝকে ছবি তোলার জন্য ফোনটিতে রয়েছে, প্যানোরামা নাইট মোড, পোর্ট্রেট মোড, সিন ডিটেকশন, এক্সট্রিম নাইট মোড এবং এক্সপার্ট মোড ফিচার। সেলফি এবং ভিডিও কলিংয়ের জন্য ফোনটির সামনে রয়েছে এফ/২.৪৫ অ্যাপারচারসহ ১৬ মেগাপিক্সেলের সনি আইএমএক্স৪৭১ ক্যামেরা সেন্সর।
ফোনটিতে রয়েছে ৩৩ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধাসহ ১৫ ওয়াট কিউআই ওয়্যারলেস চার্জিং সুবধা। এতে ৫ ওয়াট রিভার্স চার্জিং সাপোর্টসহ ৪,৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে।
কানেক্টিভিটি অপশনে রয়েছে ৫জি, ৪জি এলটিই, ওয়াই-ফাই ৬, ওয়াই-ফাই ৬ ডিরেক্ট, ব্লুটুথ ভি৫.২, এনএফসি, জিপিএস/এ-জিপিএস, গ্লোনাস, গ্যালিলিও, কিউজেডএসএস এবং ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট।
হ্যান্ডসেটটির অনবোর্ড সেন্সরগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, অ্যাক্সিলোমিটার, ইলেকট্রনিক কম্পাস, জাইরোস্কোপ, অ্যাম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর এবং প্রক্সিমিটি সেন্সর।
এছাড়াও ফোনটিতে রয়েছে ফেসিয়াল রেকগনিশন সিস্টেম, যা মুখের আবরণের সাথেও কাজ করে। ৩ বছরের অ্যান্ড্রয়েড আপডেট এবং ৪ বছরের সিকিউরিটি প্যাচ পাওয়া যাবে।
৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ যুক্ত বেস ভ্যারিয়েন্টের মূল্য ধরা হয়েছে ৩২,৯৯৯ ভারতীয় রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৩ হাজার টাকা। ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ যুক্ত টপ-এন্ড মডেলে মূল্য ধরা হয়েছে ৩৮,৯৯৯ রুপি, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫২ হাজার টাকা।