ব্যয় সংকোচন নীতির পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে মেটা। এতে নতুন কর্মী নিয়োগ আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্লাটফর্মটি। সম্প্রতি এমনই ইঙ্গিত দেন মেটা শীর্ষ নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। এতে অনেক কর্মীই ছাঁটাইয়ের শঙ্কায় ভুগছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
কর্মীদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জাকারবার্গ জানান, বৈশ্বিক আর্থসামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে হচ্ছে।
গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কর্মী ছাঁটাইয়ের খবর সামনে আসার পর এবার এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে সোশ্যাল জায়ান্টটি। মন্দার শঙ্কায় প্রযুক্তি প্লাটফর্মে এরই মধ্যে বিজ্ঞাপন কমিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
কর্মীদের কাছে পাঠানো বার্তায় জাকারবার্গ বলেন, আশা করেছিলাম অর্থনীতি এ সময়ের মধ্যে স্থিতিশীল হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা সে রকম লক্ষণ দেখছি না। এ কারণে আমাদের রক্ষণশীল নীতি হাতে নিতে হচ্ছে।
২০০৪ সালে ফেসবুকের যাত্রা শুরুর পর এই প্রথম ব্যয় সংকোচন নীতিতে যাচ্ছে সোশ্যাল জায়ান্টটি। ২০২৩ সালে মেটার পরিধি চলতি বছরের চেয়ে ছোট হবে।
জাকারবার্গের এ ইঙ্গিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে নতুন কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে মেটা। এতে এরই মধ্যে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন অনেক কর্মী। গত জুনে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চলতি বছরে প্রকৌশলী নিয়োগ অন্তত ৩০ শতাংশ কমানোর চিন্তা করছে মেটা।
তবে মেটা সিইওর সর্বশেষ নির্দেশনায় এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে প্রায় সব বিভাগে কর্মী সংকোচন করবে সোশ্যাল জায়ান্টটি। মহামারীতে অনলাইন-নির্ভরতা বৃদ্ধিতে বেশির ভাগ প্রযুক্তি কোম্পানিরই আয় বেড়েছিল। এতে নতুন কর্মী নিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ বাড়ায় কোম্পানিগুলো। কিন্তু করোনার চাঙ্গা পরিস্থিতিতে ভাটা নেমেছে অনেক কোম্পানির আয়ে। এতে নতুন কর্মী নিয়োগ ও বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেট এক ঘোষণায় জানায়, ২০ জুলাই থেকে নতুন কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছে তারা। অন্য মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল জানায়, ২০২৩ সালের শুরু থেকে কর্মী নিয়োগ কমাবে। টিকটকসহ বিভিন্ন কোম্পানির কাছে চ্যালেঞ্জের মুখে মেটার চাঙ্গা অবস্থায় ভাটা পড়েছে। ব্যবহারকারী কমার পাশাপাশি চলতি বছরে এ পর্যন্ত মেটার শেয়ারদর পতন হয়েছে ৬০ শতাংশেরও বেশি।
গত জুলাইয়েই জাকারবার্গ সতর্ক করে বলেছিলেন, চলতি বছরে বিভিন্ন বিভাগে নতুন কর্মী নিয়োগ লক্ষণীয়ভাবে কমবে। ৩০ জুন নাগাদ মেটার ৮৩ হাজার ৫০০ কর্মী ছিল। দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫ হাজার ৭০০ নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে তারা।
প্রথম প্রান্তিকের আয়-ব্যয়ের উপাত্ত প্রকাশের সময় মেটা জানায়, তাদের বার্ষিক ব্যয় পূর্ব প্রাক্কলনের চেয়ে ৩০০ কোটি ডলার কম হবে।