রবিবার ইরান তাদের জাতীয় অবকাঠামোর বিরুদ্ধে পরিচালিত “ব্যাপক ও জটিল” সাইবার হামলা সফলভাবে প্রতিহত করেছে বলে সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ইরানের ইনফ্রাস্ট্রাকচার কমিউনিকেশন কোম্পানির প্রধান বেহজাদ আকবারি এক বিবৃতিতে একে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ সাইবার হামলা বলে উল্লেখ করেছেন।
আকবারি জানান, হামলার ধরন ও ব্যাপ্তি এতটাই মারাত্মক ছিল যে জরুরি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়। যদিও নির্দিষ্ট কোনো অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল কিনা তা প্রকাশ করা হয়নি, তবে সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, ইরানের জাতীয় নেটওয়ার্ক কাঠামো বিপর্যস্ত করাই ছিল প্রধান লক্ষ্য।
বিস্ফোরণ ও সাইবার হামলা: রহস্যজনক সমাপতন
এই সাইবার হামলার মাত্র একদিন আগে, ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের বান্দার আব্বাস বন্দরে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, বন্দরটিতে রাসায়নিক পদার্থ থেকেই দুর্ঘটনার সূত্রপাত। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, এই বিস্ফোরণের সাথে কোনো সামরিক সরঞ্জাম বা ক্ষেপণাস্ত্র জ্বালানির সংযোগ নেই।
ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে
ঘটনাগুলো এমন সময় ঘটলো যখন ওমানে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার তৃতীয় দফার পরমাণু আলোচনা শেষ হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব ঘটনার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র বা পূর্বপরিকল্পিত হামলার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ২০২১ ও ২০২৩ সালেও ইরানের জ্বালানি অবকাঠামোতে বড় ধরনের সাইবার হামলা হয়েছিল, যার দায় স্বীকার করেছিল ‘প্রিডেটরি স্প্যারো’ নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ।
২০২৩ সালের হামলায় শত শত পেট্রোল স্টেশন অচল হয়ে জনজীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবারও সেই ধরনের কোনো সংগঠন অথবা এর পিছনে কোনো রাষ্ট্রীয় মদত থাকতে পারে।
ইসরায়েলি ইঙ্গিত!
ঘটনার দিনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মন্তব্য করেন, “ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে শুধু সীমিত করাই যথেষ্ট নয়, ধ্বংস করতে হবে।”
এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
কী হবে সামনে?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরানের অবকাঠামো ও পারমাণবিক কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে যে টানাপোড়েন চলছে, তা এখন সরাসরি সাইবার যুদ্ধ এবং সশস্ত্র সংঘাতে গড়াতে পারে।
সাম্প্রতিক বিস্ফোরণ ও সাইবার হামলা মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন সংঘাতের পূর্বাভাস দিচ্ছে বলেও সতর্ক করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।