চালকবিহীন গাড়ি নিয়ে গুগল ও অন্যান্য প্রযুক্তি এবং অটোমোবাইল প্রতিষ্ঠানের গবেষণার কথা তো সবারই জানা আছে। তবে গণপরিবহনের ক্ষেত্রে গাড়ির তুলনায় বাস বেশি কার্যকর। আর সে কারণে চালকবিহীন গাড়ির পাশাপাশি চালকবিহীন বাস নিয়েও চলছে গবেষণা।
এরই মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চালকবিহীন বাস রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়েও দেখেছে। এবার অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরে নামল ‘আরএসি ইন্টেলিবাস’ নামের নতুন এক চালকবিহীন বৈদ্যুতিক বাস। পার্থের রাস্তায় তিন মাস পরীক্ষামূলকভাবে চলবে বাসটি। আর সে কারণে রয়েল অটোমোবাইল ক্লাব অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়াকে (আরএসি) দেওয়া হয়েছে বিশেষ অনুমতি। এ খবর জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবল।
আরএসির এক্সিকিউটিভ জেনারেল ম্যানেজার প্যাট্রিক ওয়াকার প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলকে বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে চালকবিহীন বাসটি চালানো সফল হয়েছে। অনুমতি পেলে আমরা আরো কয়েকটি রাস্তায় পরীক্ষামূলকভাবে বাসটি চালিয়ে দেখব। তবে সেজন্য নতুন করে অনুমতি নিতে হবে।’
বর্তমানে আড়াই কিলোমিটার রাস্তায় বাসটি চালানো হয়েছে। এতে সময় ব্যয় হয়েছে ২০ মিনিট। ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার বেগে বাসটি চালানো হয়েছে। তবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৫ কিলোমিটার বেগে বাসটি যাত্রী বহন করতে পারবে।
প্যাট্রিক ওয়াকার আরো বলেন, ‘যে রাস্তায় বাসটি চালানো হয়েছে সেটি বেশ ব্যস্ত সড়ক। গাড়ির পাশাপাশি পথচারী, সাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনও রয়েছে সড়কটিতে। কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই এ রাস্তায় বাসটি চলেছে। তবে আমরা আরো জটিল ও জনবহুল রাস্তায় বাসটি চালিয়ে দেখতে চাই।’
ওয়াকার জানান, বাসটিতে রয়েছে পাঁচ স্তরের স্বয়ংক্রিয় পরিচালন ব্যবস্থা। তাই এটিতে মানব-চালকের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কোনো স্টিয়ারিং হুইল, অপারেটর বা প্যাডলও রাখা হয়নি। ট্রাফিক সংকেত, পথচারী, জেব্রা ক্রসিং বোঝার জন্য বাসটিতে রয়েছে ক্যামেরা ও সেন্সর। মানচিত্র ও পথ চিনে চলার জন্য রয়েছে জিপিএস সিস্টেম। সংঘর্ষ এড়াতে রয়েছে ইমার্জেন্সি ব্রেকিং সিস্টেম।
আরএসি ইন্টেলিবাসে রয়েছে ১১টি আসন। এ ছাড়া চারজন যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন। তবে পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর সময় নিরাপত্তার স্বার্থে যাত্রীদের বাসের ভেতরে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।
ওয়াকার জানান, আগামী চার বছরের মধ্যে যেকোনো রাস্তায় চলাচলের জন্য উপযোগী হয়ে উঠবে আরএসি ইন্টেলিবাস। তিনি বলেন, ‘আগামী তিন মাস আমরা বিভিন্ন রাস্তায় বাসটি চালিয়ে দেখব। আমাদের অভিজ্ঞতা খুবই সন্তোষজনক কারণ যাত্রীরা বেশ আগ্রহ নিয়েই বাসে উঠছে।’