গাড়ি কিনতে চাইলেও ক্রেতাদের পকেটে টানের জন্য পুরনো গাড়ি কেনায় অনেকেই ঝুকছেন। এটা ঠিক পুরনো গাড়ির দাম কম এবং যদি তা কোনও পরিচিত আত্মীয় বা বন্ধুর কাছ থেকে কেনা হয় তাহলে ঠকার আশংকা কম থাকে বলে অনেকেই মনে করেন।
নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন, রোড ট্যাক্স, আরটিও চার্জ— এই সব একগুচ্ছ অতিরিক্ত খরচা হয় যেটা পুরনো গাড়ি কেনায় থাকে না। অর্থাৎ সেদিক দিয়ে বিচার করলে পুরনো গাড়ি কিনলে অনেক কম দামে ভাল গাড়ি পাওয়ার সুযোগ থাকে। তবে আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টা এতটা ইতিবাচক মনে হলেও ততটা ইচিবাচক আদৌ নয়৷ বরং নতুন গাড়ি কেনার তুলনায় পুরনো গাড়ি কেনার ঝামেলা বেশি৷ তাই বেশ কিছু ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
গাড়ির গায়ে কোনও দাগ আছে কিনা, কোথাও কোনও ফাটল আছে কিনা তা ভালো করে দেখে নিন। এছাড়াও কোনও স্পার্টস বদলানো হলে তা ঠিকঠাক ফিট করছে কিনা তাও দেখুন। গাড়ির রংটাও একবার দেখে নিন। নতুন রং হলে সব জায়গায় ঠিকমতো রং হয়েছে কিনা, ভেতরে কোথাও ভাঙা, ফাটা আছে কিনা তা দেখে নিন। এই সব সমস্যা না থাকলে, অর্থাৎ ফিটিং সংক্রান্ত সমস্যা না থাকলে গাড়ি ভালোই বলা চলে।
কোথাও কোনও মরিচা আছে কি না
গাড়ির তলায় কোথাও কোনও মরিচা পড়েছে কিনা তাও খেয়াল রাখুন। গাড়ি ব্যবহার হলে, পানি লাগলে মরচে পড়া স্বাভাবিক। মরিচাতে গাড়ির কতটা ক্ষতি হয়েছে তা ভালো করে দেখে নিন। গাড়িতে মরিচা ধরা এমন গাড়ি নেবেন না। তাহলে পুরনো গাড়ি কিনে অযথা অনেক পয়সা খরচা করতে হতে পারে।
সব সিট দেখে নিন
সব কটি সিটে বসে দরজা খুলে ভালো করে দেখে নিন। সিট নোংরা কিনা, কোনও ফোম ছেঁড়া কিনা সেসব খুঁটিয়ে দেখুন। ড্রাইভারের সিটে বসে দেখে নিন৷ সিট বেল্ট, সব এয়ার ব্যাগ ভালো করে কাজ করছে কিনা তা যাচাই করে নিন। সেই সঙ্গে স্টিয়ারিং তো অবশ্যই দেখবেন। এমনকী মিউজিক সিস্টেম, এসি এসবও চালিয়ে পরীক্ষা করে নিন৷
ইঞ্জিন, টায়ার দেখে নিন
রঙ করা চকচকে গাড়ি দেখে মোহিত হবেন না৷ তাই গাড়ির বিষয়ে অভিজ্ঞ এমন কাউকে নিয়ে যান। ইঞ্জিন, টায়ার সব ভালো করে পরীক্ষা করুন। কতবার টায়ার বদলাতে হয়েছে তা জানুন। কতবার সার্ভিসিং হয়েছে সেই কাগজও নিন। কেনার আগে অন্তত একটা টেস্ট ড্রাইভ করে নেবেন৷ দেখে নিন গিয়ার চেঞ্জ করার সময় মসৃণ ভাবে হচ্ছে কিনা, স্পিড বাড়ালে গাড়িতে মৃদু কম্পন টের পাচ্ছেন কিনা। বর্তমানে প্রায় সব গাড়িতেই নিজস্ব কম্পিউটার আছে, তাতেও আপনাকে জানিয়ে দেবে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা ইঞ্জিন, ট্রান্সমিশন বা অন্য কোথাও । এছাড়াও অবশ্যই ব্রেক ভালো করে দেখে নেবেন। গাড়ি কত কিলোমিটার চলেছে তাও অবশ্যই দেখবেন।
ঋণ নেওয়া
পুরনো গাড়ি কেনার ক্ষেত্রেও ঋণ মিলবে তবে সেক্ষেত্রে সাধারণত বেশি সুদ দিতে হয়৷ এজন্য ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল কম রাখার কথা ভাবা উচিত৷ তাছাড়া দেখে নেবেন ওই গাড়ির জন্য আগের মালিক যে ঋণ নিয়েছিল তা পুরোপুরি শোধ করে দিয়েছে কি না৷
কাগজপত্র
সর্বোপরি যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল গাড়ি সংক্রান্ত কাগজপত্র৷ ঠিকমতো মালিকানা পেতে কেনার সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ির নথিপত্র নিজের নামে করুন। যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়াও একবারে সারুন।তবে তার আগে দেখে নিন গাড়ির নামে পূর্বোক্ত কোনও অভিযোগ আছে কিনা।। কতবার ফাইন দিতে হয়েছে, কোনও ফাইন বা ট্যাক্স বাকি আছে কিনা সেটাও জেনে নিন। এছাড়াও গাড়ি কেনার পর নিজের নামে ইনসিওরেন্সের কাগজ বদলে নিন। কোথাকার গাড়ি, কোন শো রুম থেকে নেওয়া এই সব অরিজিনাল কাগজ দেখে তবেই কিনবেন।