গোটা বিশ্ব আজ করোনাভাইরাসের আক্রমণে এক জটিল সংকটে রয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। তাই সংকট সমাধানে যারা অনলাইনে নিত্যপণ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রয় এবং ডেলিভারির সঙ্গে জড়িত, তাদের সেবা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব)।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এরইমধ্যে অনলাইনভিত্তিক সেবা ও পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিরাপত্তা বিধান করে সঠিক দামে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে সদস্য কোম্পানিদেরকে তাদের কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করার অনুমতি দিতে বলা হয়েছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ই-ক্যাবের চলমান আট বিভাগের মেলা, ই-বাণিজ্য প্রশিক্ষণ এবং আসন্ন এজিএম স্থগিত করা হয়েছে। ই-ক্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির যাবতীয় সভা এবং সব স্ট্যান্ডিং মিটিংগুলো অনলাইনে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ই-ক্যাবের সেক্রেটারি আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে যাতে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি, সেজন্য আমরা ই-ক্যাব থেকে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আপনারা যারা ঘরে বসে আমাদের এই কাজগুলোতে শরিক হতে চান তারা জানাবেন। আশাকরি দেশের দুর্যোগ পরিস্থিতিতে আমরা সবাই একত্রে কাজ করতে পারব।’
ই-ক্যাবের নেওয়া উদ্যোগ
১. বাংলাদেশ পোস্টঅফিসসহ দেশের সব ডেলিভারি কোম্পানিগুলো একত্রে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে মানুষের হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ পৌঁছে দেওয়া যায়।
২. ডেলিভারি কাজে যারা বিভিন্ন লজিস্টিক ও ই-কমার্স কোম্পানিতে কাজ করছেন তাদেরকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেওয়া এবং ওয়্যারহাউজগুলোকে সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত রাখার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
৩. গুরুত্বপূর্ণ সেফটি ইকুইপমেন্ট প্রস্তুতকারী এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। যারা উৎপাদন ও বিক্রয় করেন তাদের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা যায়।
৪. ই-কমার্স সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি ডেডিকেটেড হেল্পসেন্টার তৈরি করা হবে। যাতে জরুরি অবস্থায় বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ পাওয়া যায়।
৫. একটি ই-বিজনেস সাপোর্ট সেন্টার তৈরি হচ্ছে, যার মাধ্যমে ঘরে বসে মানুষ ই-লার্নিং এবং ই-বিজনেস সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য ও সেবা পাবে।
৬. ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য একটি কমপ্লেন সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে।
৭. মানুষকে ডিজিটাল লেনদেনে সচেতন করে তোলার জন্য একটি অনলাইন ভলান্টিয়ার টিম তৈরি করা হচ্ছে।
৮. ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্য সরকারি-বেসরকারি ফান্ড এবং ডোনেশন কালেকশন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
৯. একটি ই-কমার্স রিসার্চ টিম তৈরি করা হচ্ছে, যারা বিভিন্ন ডাটা এনালাইসিস করে জরুরি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।
১০. জরুরি অবস্থায় সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য এটুআই, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পোস্ট অফিস, স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ধরনের সাপোর্ট দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।