কোভিড-১৯ নামক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা বেড়েছে। কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ফার্মেসি এবং নিত্যপণ্যের দোকান থাকলেও করোনার ঝুঁকি এড়াতে অনেকে অনলাইনেই কেনাকাটা করছেন।
ফলে অনলাইনে বর্তমানে সবচেয়ে চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে গ্রোসারি অর্থাৎ মুদি পণ্যের। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে চাপে আছে অনলাইন মুদি এবং খাদ্যপণ্য সরবরাহকারী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘চালডাল ডটকম’।হঠাৎ করেই পণ্যের অর্ডার কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় পণ্য ডেলিভারি দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্ধিত এই চাহিদা সামাল দিতে ডেলিভারির জন্য বাড়তি জনবল নিয়োগ দিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির আগে চালডাল ডটকমে দৈনিক তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার অর্ডার আসত। কিন্তু এখন অর্ডারের পরিমাণ তিন হাজার থেকে ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একদিনে তিন হাজারের বেশি ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় বাকিদের পরের দিন ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে।
চালডাল ডটকমের হেড অব গ্রোথ ওমর শরিফ ইবনে হাই বলেন, করোনায় লকডাউন হওয়ায় প্রচুর অর্ডার বেড়েছে। আমরা অর্ডার নিচ্ছি আমাদের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী। যতটুকু ডেলিভারি দেয়া সম্ভব ততটুকুই অর্ডার প্রতিদিন নেয়া হচ্ছে। কারণ একটাই সব ক্রেতাই যেন পণ্যগুলো দ্রুত বুঝে পায়। আর বাড়তি চাপের কথা মাথায় রেখে চালডাল ডটকমে বর্তমানে প্রচুর কর্মী বা সহযোদ্ধা দরকার। তাই নিয়োগ দেবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ কারণে সবার কাছে সহযোগিতা চাইছি। যাদের এই মুহূর্তে কাজ প্রয়োজন, চাকরি নেই বা পার্টটাইম কাজ খুঁজছেন কিংবা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে চান তারা চালডালে সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ডেলিভারি টাইম ১/২ ঘণ্টা থেকে বেড়ে ২/৩ দিনে গিয়েছে তবে পণ্য পাচ্ছেন সব গ্রাহকই। করোনা বিপর্যয়ে চালডালের বেশি চাপের কারণে প্রতিষ্ঠানটির সিইও, সিওও, ডিরেক্টররাও অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। কারণ গ্রাহকরা যেন কম সময়ে পণ্য হাতে পায়। সাপ্লাইচেইনের উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ভবিষ্যতে গ্রাহকদের পণ্যের কোনো অভাব এবং সমস্যাও যেন না হয়। এছাড়াও আগামী এক/দেড় মাসের মধ্যে আরো দশটি ওয়্যারহাউজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফলে ঢাকার আরো অনেক এলাকায় পণ্য পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে দ্রুত। তখন ডেলিভারির সময়ও লাগবে কম।
ওমর শরিফ ইবনে হাই বলেন, হোম ডেলিভারির ওপর চাপ বাড়ায় বাইকার, সাইক্লিস্ট, ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ ও পণ্য বাছাইকারী প্রয়োজন। যাদের বেতন দেয়া হবে সাড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১৬ হাজার টাকা। এছাড়াও ৩ দিন পর একদিন ছুটি এবং আকর্ষণীয় বোনাস দেয়া হবে। আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদনের পাশাপাশি বনশ্রীর ব্যাংক কলোনি অফিসে যোগাযোগ করতে পারবেন।
করোনার বর্তমান সময়ে কর্মী ও গ্রাহকদের সুরক্ষার ব্যাপারে তিনি বলেন, প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন এবং সুরক্ষা দেবার চেষ্টা করা হচ্ছে। ডেলিভারির কাজে নিয়োজিতদের সেফটি উপকরণ নিশ্চিত করা হচ্ছে। যখন ডেলিভারি করতে যায় তখন সেফটি কিটস ব্যবহার করছে কিনা তা চেক করা হয়। ডেলিভারি পর কাস্টমারকেও কলসেন্টার থেকে ফোন দিয়ে ডেলিভারিতে কোনো সমস্যা বা ডেলিভারিম্যান গ্লাস এবং মাস্ক পড়ে ছিল কি না তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।