রেশমিন জান্নাত শ্রদ্ধা চৌধুরী। রাজশাহীর মেয়ে। রাজশাহীর একটি বেসরকারী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। আঁকাআকি তার শখ। বেসরকারি চাকুরে বাবা ও গৃহিণী মায়ের মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় সন্তান। সেমিস্টার শেষের ছুটিতে কিছু একটা করার নেশায় হয়ে গেলেন উদ্যোক্তা। রেশমিন জান্নাতের উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন। রেশমিন জান্নাত শ্রদ্ধা চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন মিরাজুল ইসলাম জীবন।
আপনার নিজের সম্পর্কে জানতে চাই?
আমি রেশমিন জান্নাত শ্রদ্ধা চৌধুরী। রাজশাহীর মেয়ে। আমার বা বেসরকারি কোম্পানীতে চাকরি করেন। মা গৃহিণী। আমাদের পরিবার একটি মধ্যবিত্ত পরিবার। আমি বাবা-মার বড় সন্তান। বর্তমানে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
উদ্যোক্ত হওয়ার শুরু গল্পটা জানতে চাই।
আমার প্রফেশনাল পরীক্ষা শেষ এ প্রায় দেড় মাস ছুটি পেয়েছিলাম। সব সহপাঠীরা কিছু না কিছু করছিল। আমিও ব্যতিক্রমধর্মী কিছু একটা করতে চাইলাম। আগাগোড়াই আমার আঁকাআঁকির ভালো হাত। এটা দেখে আমার বন্ধু রাশাদ ওর পোট্রেট আঁকিয়ে দিতে বলল। ওকে দিলে ও অনেক খুশি হয়। এরপর ওই আইডিয়া এটা নিয়ে অনলাইন ব্যবসা করার একটা আইডিয়া দেয়। এরপর সাহস করে গতবছর আগস্ট মাসে আমার পেজ My Little Artland শুরু করি। শুরু থেকেই বেশ সাড়া পায়।
কোন ধরনের প্রোডাক্ট পাওয়া যায় আপনার প্রতিষ্ঠান?
প্রথমে শুধু পোট্রেট আঁকা নিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন গহনা এবং ক্রাফট যুক্ত করেছি।
মেডিকেল স্টুডেন্ট হওয়ার পরও কেন এধরনের উদ্যোক্তা হতে চাইলে?
আমার পড়াশোনার জন্য অনলাইন ব্যবসায় সবচেয়ে সুবিধাজনক। আমার সময় বাঁধা কিছু পছন্দ না। অনলাইনে সময়টা পুরো আমার দখলে।মেডিকেল এ পড়াশোনার চাপ মারাত্মক বেশি। আমি পড়ার ফাঁকে কাজ করি। মেডিকেলে প্রতিদিনই পরীক্ষা থাকে। এজন্য রোজ অর্ডার নিয়ে পারিনা। আমি ধীরে ধীরে আমার ব্যবসা বড় করতে চাই। বর্তমানে মাসে ৭ থেকে ১৫ হাজার টাকার মতো আয় হয়। এটা আমার হাত খরচের জন্য যথেষ্ট। আর একটা মজার বিষয়। আমার ভালো লাগারও বিষয় যে, শুরুতে আমার পুঁজি ছিল মাত্র সত্তর টাকা।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলুন।
আমার পেজ যেদিন আমি খুলেছিলাম তখন একশত অরগানিক ফলোয়ার ছিল। আর এখন মাত্র নয় মাসে অরগানিক ফলোয়ার তিন হাজার পার করেছে। এর পিছনে আমার পরিবারের ব্যাপক সহযোগিতা আছে। আমার বাবা মা আমাকে কোন কাজে বাধা দেয়নি কখনো। আর আমার ছোট বোন প্রচার এ মূখ্য ভূমিকা রেখেছে। আমার খালামনি কাজ করতে সহযোগিতা করেছে। আমি স্বপ্ন দেখি একসময় আমার পেজ এর ওয়েবসাইট থাকবে নিজস্ব। আমার পেজ একটা ব্র্যান্ড হবে। শোরূম থাকবে দেশের বিভিন্ন জায়গায়।
উই গ্রুপ থেকে আপনার প্রাপ্তি সম্পর্কে কিছু বলুন?
উই গ্রুপ এ কিছু দিন আগে জয়েন করেছি। আমি উই এর এই গ্রুপটিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নজর এ দেখি। রাজিব স্যার এর পথ পরিচালনায় উই তে শিখার আছে অনেক কিছু। রোজ শিখছি, চিনছী, জানছি। দেশীয় পন্যের প্রতি ভালোবাসা এখান থেকেই তৈরি হয়েছে। আমার ব্যবসায়িক জীবনে উই ব্যাপক পরিবর্তন আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।