পেপার কাটাকাটি শুধু অপচয় নয়। কাগজ দিয়ে অনেক শৈল্পিক কাজ করা যায়। ভালোলাগা আর আগ্রহ থাকলে পেপার কাটাকাটিতেও ক্যারিয়ার হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যাল থেকে অর্থনীতিতে অর্নাস মাস্টার্স শেষ করে গতানুগতিক ক্যারিয়ার চিন্তা থেকে বের হয়ে, নিজের ভালো লাগা কে পুঁজি করে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেন সানজিদা ওসমান। সানজিদার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন। সানজিদা ওসমান এর সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন।
– আপনার সম্পর্কে জানতে চাই?
– আমি সানজিদা ওসমান। চট্টগ্রামে আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বাবা মার দুই মেয়ের মধ্যে আমি বড়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছি অক্টোবর ২০১৯ এ। বই পড়া, পাখি পোষা আর ঘুরে বেড়ানো আমার শখ। যা কিছু করি সবসময় সম্পূর্ণ আন্তরিকতা দিয়েই করার চেষ্টা করি। আর এই আন্তরিকতা দিয়েই বর্তমানে চেষ্টা করছি একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার।
– উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুর গল্পটা জানতে চাই।
– অনার্স প্রথম বর্ষে থেকে নিজে কিছু করার ইচ্ছা ও পড়াশোনার পাশাপাশি হাতখরচের ব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে বিজনেস শুরু করি। কাজ করতে করতে বুঝেছি ও শিখছি। অনার্স তৃতীয় বর্ষে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরী করতে ‘ক্রাফটি বায়োস্কোপ’ শুরু করি ২০১৭ সালে। মাস্টার্স এর ভাইভাতে স্যারের প্রশ্ন ছিল ক্যারিয়ার নিয়ে তোমার পরিকল্পনা কি? স্বপ্নের দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেছিলাম ’স্যার উদ্যোক্তা হবো’। মাস্টার্স পরীক্ষার পরদিন থেকে আমার বান্ধবীরা চাকরির প্রস্তুতি নিতে শুরু করছে আর আমি পুরোদমে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষ্যে পথ চলা শুরু করি।
– কোন ধরণের প্রডাক্ট পাওয়া যায় আপনার প্রতিষ্ঠানে?
– আমি মূলত একজন পেপার ক্রাফটার। কাগজ দিয়ে কাস্টমাইজড থিম উপহার সামগ্রী বানিয়ে থাকি। তবে আমার সিগনেচার প্রডাক্ট হল কাস্টমাইজড থিম এর স্ক্র্যাপবুক। এছাড়াও, কার্ড, ফটো ফ্রেম, গৃহসজ্জা সামগ্রী পাওয়া যায় আমার ‘ক্রাফটি বায়োস্কোপে’।
– এ ধরণের উদ্যোক্তা কেন হতে চাইলেন?
– ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুব শৌখিন একজন মানুষ। উপহার দেয়া নেয়া দুটোই আমার খুব পছন্দের। আমার বিশ্বাস প্রতিটা উপহারে প্রিয়জনের জন্য সর্বোচ্চ আবেগটুকু মিশে থাকে। আমার সেই আবেগ নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে। সাফল্য পেতে ভালোলাগা থেকে কাজ করতে হয়। তাই আমার ভালোলাগার সাথে ক্যারিয়ার গড়তে ক্রাফটার উদ্যোক্তা হয়েছি।
– ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলুন।
– ’ক্রাফটি বায়োস্কোপ’কে সারাদেশে ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত করা পাশাপাশি সৃজনশীল তরুণদের নিয়ে দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে কাগজ শিল্পকে অন্যান্য হস্তশিল্পের মত সুপরিচিত করা আমার স্বপ্ন।
– উই গ্রুপ থেকে আপনার প্রাপ্তি সম্পর্কে কিছু বলুন।
– আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরুই হয় একদম শূন্য থেকে। উইতে আসার আগে পণ্যের দাম নির্ধারণ, বিক্রয় পোস্ট ছাড়া বিক্রি, পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং, পণ্যের দাম নির্ধারণ, মূল্য সংযোজন সহ, ই-কমার্স বিজনেসের বিন্দুমাত্র বেসিক জানা ছিল না। উইয়ের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং কে পুঁজি করে বিজনেস ব্র্যান্ডিং এর দিকে এগোচ্ছি। উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) দেশি পণ্যের বিশাল কাস্টমার বেজ মার্কেট ও ব্যবসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ধন্যবাদ, টেকজুমকে সময় দেওয়ার জন্য।
-অসংখ্য ধন্যবাদ টেকজুমকে