দেশে অনলাইন খাবার সরবরাহকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠান ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের অভিযানে তাদের ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। বুধবার (২৮ অক্টোবর) ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা।
ফুডপান্ডা প্রায় পাঁচ হাজার ফুডস্টোর থেকে খাবার সংগ্রহ করে ভোক্তার কাছে বাইকারদের মাধ্যমে সরবরাহ করে থাকে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফুডপান্ডার চুক্তি রয়েছে, যার আওতায় ফুডপান্ডা কমিশন পায়।
ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গত ১৫ অক্টোবর ফুডপান্ডার অফিসে অভিযান চালান ভ্যাট গোয়েন্দারা। এতে তারা ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পায়। ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পরিচালক নাজমুন্নাহার কায়সার ও সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন অভিযানটি পরিচালনা করেন। এ সময় ভ্যাট সংক্রান্ত নথিপত্র দেখাতে পারেননি ফুডপান্ডার কর্মকর্তারা। তল্লাশির একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ল্যাপটপে মাসভিত্তিক বিক্রয়ের কিছু গোপন তথ্য পাওয়া যায়। আরও কিছু বাণিজ্যিক দলিল জব্দ করা হয়।
ফুডপান্ডা প্রতিষ্ঠানটি মূলত ইলেকট্রনিক নেটওয়ার্ক (অনলাইন প্ল্যাটফর্ম) ব্যবহার করে পণ্য বিক্রয় করে থাকে, যার প্রকৃত সেবার কোড এস-০৯৯.৬০। এই কোডের আওতায় ভ্যাট ৫ শতাংশ এবং বাড়ি ভাড়ার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। কিন্তু তারা তথ্যপ্রযুক্তি সেবা অর্থাৎ সেবার কোড এস-০৯৯.১০-এর আওতায় নিবন্ধন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এই কোড কোনোভাবেই তাদের ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে জানান কর্মকর্তারা। তারা বাড়ি ভাড়ার ওপর অবৈধভাবে শূন্য হারে ভ্যাট সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে তা ব্যবহার করে আসছে।
দাখিলপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি লিমিটেড কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও পণ্য ক্রয়ের ওপর কোনও উৎসে মূসক পরিশোধ করেনি।
ভুল সেবা কোড ব্যবহার, প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন এবং উৎসে ভ্যাট না দেওয়ায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আজ বুধবার ভ্যাট গোয়েন্দা মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হবে।