আমাদের দেশে দিন দিন ই-কমার্স ব্যবসা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করছেন তাদের পণ্যের সোর্সিং এর জন্য পুরান ঢাকার অলিগলি হলো সেরা জায়গা। খাবার, পোশাক, চামড়াজাতপণ্যের মত গুরুত্বপূর্ণ সকল পণ্যের রয়েছে অপার সুযোগ ও সম্ভবনা। এর ফলে উদ্যোক্তারা কম দামে এবং কম পরিবহন খরচে নিজেদের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো ও কাঁচামাল খুব সহজেই জোগাড় করতে পারবেন।
আদি ঢাকা বা পুরান ঢাকা যে নামেই ডাকা হোক না কেন চোখের সামনে ভেসে আসে অগোছালো কিন্তু মায়া আর আবেগ ভরা অলিগলির এক চিত্র।
ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের এর অন্তর্ভুক্ত একটি অঞ্চল। নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়,মেডিকেল কলেজ সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা গভঃ মুসলিম হাই স্কুল, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল পোগোজ স্কুল তিব্বিয়া হাবিবিয়া ইউনানী মেডিকেল কলেজ গুলো উল্লেখযোগ্য।
পুরান ঢাকার মানুষ ভোজনরসিক। এরা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখেন টিক্কা,জালি কাবাব, কাঠি কাবাব সহ হরেকরকম কাবাব, দই বড়া,কাচ্চি বিরিয়ানি, পাক্কি বিরিয়ানি, মোরগ পোলাও এর মত মসলাদার খাবার। দেশ বন্ধু রেস্টুরেন্টেের সকালের নাস্তা এখানকার মানুষের খুবই প্রিয়। এছাড়াও হাজীর বিরিয়ানি, নান্নার বিরিয়ানি, রয়েলের কাচ্চি,হোটেল সুপারের খাসির লেগ রোস্ট,চা, বিউটির লাচ্ছি,ফালুদার স্বাদ নিতে দূর দুরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন এদিকে।
খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি আদি ঢাকার মানুষেরা যেন একটু বেশী আমোদপ্রিয়। ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, শবে বরাত,দূর্গা পূজা মতই পৌষ সংক্রান্তির দিনে ছেলে বুড়ো সকলেই ঘুড়ি উৎসবে মেতে ওঠে। দুদিন ব্যাপি প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদে ঘুড়ি উড়ায়।এই উৎসব “সাকরাইন” নামে বেশী পরিচিত।
পুরান ঢাকা আমাদের দেশের প্রধান বানিজ্য কেন্দ্র। চকবাজার,মৌলভীবাজার, নবাবপুর,ইসলামপুর,পাটুয়াটুলী,সদরঘাট, নয়াবাজার,বংশাল,মিটফোর্ড, বাংলাবাজার,আলুবাজারের গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক এলাকার অবস্থান এখানে। হয়ত এই কারনেই এদিকের স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রধান আয়ের উৎস ব্যবসা। পাইকারী সহ খুচরা সকল ধরনের পণ্যের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে বছরের পর বছর ধরে।বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা এখান থেকে পাইকারী পণ্য নিয়ে যান।