‘আলীবাবা’র নাম শুনলেই যেনো ছোটবেলার ‘আলীবাবা এবং ৪০ চোরে’র কথা মনে পরে যায়। বর্তমানে ‘আলীবাবা’ নামে একটি ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেটি অনেক বিখ্যাত। এই প্রতিষ্ঠানটি চীন ভিত্তিক, যেটি খুব দ্রুতই মার্কেট শেয়ারের বড় আকার তাদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। সারা বিশ্ব জুড়ে রেগুলার সেলের পাশাপাশি প্রতি বছরই ‘আলীবাবা’ বেশ কিছু রেকর্ড গড়ে। ২০১৮ সালে ‘আলীবাবা’ একদিনে সেল করেছিলো ৩০.৮ বিলিওন মার্কিন ডলার। আজ আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করবো এই ‘আলীবাবা’র ব্যাপারে। এটি কত বড় এবং এর ইতিহাস নিয়েই হবে আজকের কথা।
তো চলুন নিচে গিয়ে জেনে আসা যাক বিস্তারিতঃ⤵
১৯৯৯ সালের ৪ঠা এপ্রিল ‘জেক মে’ এবং তার কিছু বন্ধু মিলে সর্বপ্রথম আলীবাবা’র কাজ শুরু করেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ‘আলীবাবা’ ছিলো একটি ‘বি টু বি’ মার্কেটপ্লেস। প্রতিষ্ঠার বছরেই ‘আলীবাবা’ ২৫ মিলিওন মার্কিন ডলারের ইনভেস্টমেন্ট পেয়ে যায় আমেরিকার বিখ্যাত ‘গোল্ডমেন সেকস’ এবং জাপানের বিখ্যাত ‘সফটব্যাংক’ থেকে। সে সময় ‘আলীবাবা’র টার্গেট ছিলো শুধুমাত্র চীনের সাধারণ মানুষের জন্য চাহিদা পূরন করা এবং চীনের জন্য ভালোমানের একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম তৈরী করা।
প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর ২০০২ সালে ‘আলীবাবা’ প্রথমবারের মতো ব্যাবসায় লাভের মুখ দেখে। পরের বছরেই ‘ই বে’ চাইনিজ মার্কেটে নিজেদের যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছিলো। তবে, নিজেদের চেষ্টায় তখন তাদের মার্কেটপ্লেস ধরে রাখতে তারা সক্ষম হয়েছিলো।
২০০৫ সালে ‘ইয়াহু’ ১বিলিওন ডলার ইনভেস্ট করে ‘আলীবাবা’র ৪০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়।
২০১৩ সালে ‘আলীবাবা’ চীনে ‘রিয়েল এস্টেট’ বিজনেসে যোগ দেয়। পরের বছর তারা হংকং’র মালিকানাধীন ‘ইন টাইম’ রিটেইলের ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়। সেই বছরেরই ৫ই জুন ‘আলীবাবা’ চীনের নামি-দামি একটি ফুটবল ক্লাবের ৫০ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ‘আলীবাবা’ বাজারে হাজির হয় ‘আই পি ইউ’ নিয়ে। আস্তে আস্তে ‘আলীবাবা’র শেয়ারমূল্য বাড়তে থাকে। শেয়ারমার্কেটে প্রবেশের পরেই ‘আলীবাবা’র রেভিনিউ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২০১৭ সালের জানুয়ারীতে ‘আলীবাবা’ অলিম্পিক কমিটির সাথে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে যায়। যার ফলে ৮০০ মিলিওন ডলারের বিনিময়ে ‘আলীবাবা’ অলিম্পিক কমিটির অফিসিয়াল স্পন্সর হয়ে যায়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ‘জেক মে’ আলীবাবা’র চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাড়ান।
বর্তমানে ‘আলীবাবা’ কনজিউমার টু কনজিউমার, বিজনেস টু কনসিউমার এবং বিজনেস টু বিজনেস তিন ক্যাটাগরিতেই ব্যবসা করে যাচ্ছে। ‘আলীবাবা’ ই-কমার্স, ক্লাউড কম্পিউটিং, এন্টারটেইনমেন্ট, মোবাইল কমার্স, রিটেইল ইত্যাদি প্রডাক্টস নিয়ে কাজ করছে। এছাড়াও ‘আলীবাবা’র রয়েছে বেশ কিছু সার্ভিস। যেগুলো হচ্ছে আলীবাবা.কম, আলীবাবা ক্লাউড, আলী এক্সপ্রেস ইত্যাদি।
বর্তমানে গড়ে প্রতি বছর ‘আলীবাবা’ প্রায় ১৩ বিলিওন অর্ডার হ্যান্ডেল করে। বিশ্বের প্রায় ২০০টি দেশে ‘আলীবাবা’ তাদের প্রোডাক্টসের সেবা দিয়ে থাকে।
বর্তমানে ‘আলীবাবা’র কারনে বিভিন্ন সাইট আগের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে গেছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো অ্যামাজন, ই বে, ওয়ালমার্ট ইত্যাদি।
অর্থের বিবেচনায় ‘আলীবাবা’কে বেশী বড় করে দেখা ঠিক হবেনা। অর্থের বিবেচনায় অ্যামাজন এবং ওয়ালমার্ট ‘আলীবাবা’র থেকে অনেক এগিয়ে। তবে নেট ইনকামের দিক দিয়ে ‘আলীবাবা’ অনেক এগিয়ে রয়েছে। ব্যাবসায়িকভাবে ‘আলীবাবা’ ফেইসবুকে’র কাছাকাছি একটি কোম্পানি।
সব মিলিয়ে বর্তমানে ‘আলীবাবা’ অনেক সফল। আশা করা যায় ভবিষ্যৎে ‘আলীবাবা’ আরও উন্নতি করবে।