দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার অর্ডার নিয়ে এখন পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকার অর্ডার নেওয়ার পর এখন লাপাত্তা। এর মধ্যে মালিকানাও পরিবর্তন করেছে ই-অরেঞ্জ। সে মালিকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এই অভিযোগে ঢাকার রাজপথে আন্দোলনে নেমেছে হাজারো গ্রাহক। রাজধানীর গুলশান-১ এর সড়ক অবরোধ করেছেন ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা। সেখানে তারা স্লোগান দিয়ে মিছিল করছেন। সোমবার বিকেলে তারা অবস্থান নেন। এ সময় সড়কে যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
৪০ জন গ্রাহক মোটরসাইকেল নিয়ে গুলশান-২ মোড়ে আসেন। পরে তারা সেখান থেকে তারা গুলশান-১ এর দিকে চলে যান। বর্তমানে তারা গুলশান-১ এবং ২ নম্বর এলাকার মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান নিয়েছেন।
গ্রাহকরা জানান স্বপ্ন ভাউচার, সামার ভাউচার নামে ডাবল টাকা ভাউচার বিক্রয় করেন ইওরেঞ্জ.শপ। স্বপ্ন ভাউচার নামে মাত্র প্রথম পর্যায় কিছু গ্রাহক ডেলিভারি পেলেও বেশির ভাগ গ্রাহকই পাননি। তবে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদেরকে জানিয়েছে তারা স্বপ্ন ভাউচার রিফান্ড করবেন। কিন্তু দীর্ঘ ২ মাস পার হয়ে গেলেও এখন কোন গ্রাহক স্বপ্ন ভাউচার রিফান্ড পাননি বলে জানান।
সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জুলাই মালিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান মালিক বিথী আক্তার। কিন্তু বর্তমান ও সাবেক মালিক সোনিয়া মেহজাবিন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে শোনা যাচ্ছে সাবেক মালিক সোনিয়া মেহজাবিন মালিকানা পরিবর্তন করে বিদেশে চলে গেছেন। তবে গ্রাহকরা এর কিছুই জানেনা। জানা যায়, ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত অরেঞ্জ বাংলাদেশ লিমিটেডের একটি অন্যতম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ অনলাইন শপ। এটি ২০১৮ সাল থেকে ঢাকা শহরে অনলাইনে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যসেবা দিয়ে আসছে। চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষ থেকে বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকা সিটিতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে এবং এর কয়েকদিন পরই সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে, তখন অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের অপারেশন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মালিক পক্ষের কাউকে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজে একটি পোস্টের মাধ্যমে অফিস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর মধ্যেই সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তাদের মালিকানা পরিবর্তন করছে। ই-অরেঞ্জের ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বীথি আক্তার নামে একজনকে কোম্পানিটির নতুন মালিক ঘোষণা করা হয়। অভিযোগ আছে, প্রতিষ্ঠানটির আগের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন দেশ ছেড়েছেন। ই-অরেঞ্জের এক প্রাক্তন কর্মচারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আন্দোলনকারী গ্রাহকরা জানতে পারেন, গত মাস থেকে বেতন আটকে থাকায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।