ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেছে ইভ্যালির ক্রেতা-বিক্রেতারা। এসব গণস্বাক্ষর স্মারকলিপি আকারে বাণিজ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য দফতরে পাঠানো হবে বলে জানান তারা।
রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ধানমন্ডি ১৪ নম্বর সড়কে ইভ্যালির প্রধান কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন ইভ্যালির শতাধিক ক্রেতা-বিক্রেতা। এ সময় তাদেরকে ‘ই-কমার্সের ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে দেব না’, ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন নষ্ট হতে দেব না’, ‘রাসেল ভাইকে মুক্তি দিন, উদ্যোক্তাদের বাঁচতে দিন’ ইত্যাদি নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ইভ্যালির ব্যাপারে গ্রাহকদের কোনো অভিযোগ নেই। তারা চাচ্ছেন রাসেলকে জামিনের মাধ্যমে মুক্তি দিয়ে সরকারের নজরদারিতে রেখে গ্রাহকদের টাকা অথবা পণ্য ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। আর যদি টাকা ফেরত না পাওয়া যায়, তবে হাজার হাজার ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে যাবে। হাজার হাজার গ্রাহকের স্বপ্নও ভঙ্গ হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশের পর আন্দোলনকারীরা রাসেল ও শামীমার মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন।
কর্মসূচির আহ্বায়ক মীর আমজাদ হোসেন আকাশ বলেন, এসব গণস্বাক্ষর স্মারকলিপি আকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য দফতরগুলোতে পাঠানো হবে। যেন সাধারণ ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কথা চিন্তা করে সরকার একটি সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণ করে।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এই মুহূর্তে রাসেলকে মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা যায়। কারণ তাকে আটকে রেখে গ্রাহকদের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। বেশি বিপদে আছি ব্যবসায়ীরা। আমাদের অনেক টাকা এখানে আটকে আছে। আমরা চাই, এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হোক।
এছাড়াও সমাবেশ থেকে ই-কমার্স গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষায় ‘বাংলাদেশে ই-কমার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ নামের নতুন সংগঠনের ঘোষণাও দেওয়া হয়।
সংগঠনের সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, ইভ্যালির সিইওর মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা তিনি কারাগারে থাকলে গ্রাহক ও বিক্রেতাদের কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। আমরা তাকে সময় দিতে চাচ্ছি। তিনি ফিরে আসুন এবং সরকারের নজরদারির মধ্যে থেকে আমাদের দেনা-পাওনাগুলো ফিরিয়ে দিন।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর গুলশান থানায় আরিফ বাকের নামের ইভ্যালির এক গ্রাহকের মামলার প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নিজ বাসা থেকে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে (প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান) গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।