প্রতারণার অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা ডটকম’ -এর চেয়ারম্যান ও পরিচালকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে সাড়ে ১১ লাখ টাকার পণ্য অর্ডার করে না পাওয়ায় গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তিনি মামলা করলেও রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যম কর্মীরা বিষয়টি জানতে পারেন।
ওই ব্যবসায়ী টঙ্গী পশ্চিম থানার উত্তর আউচপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. শামীম খান। তিনি একজন পোশাক কারখানার পার্টস ব্যবসায়ী।
মামলায় বিবাদীরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএমডি জসিমউদ্দিন চিশতী (৫৭), চেয়ারম্যান ডা. এম আলী ওরফে মোজতবা আলী (৬০), সিইও সিরাজুল ইসলাম রানা, প্রধান ব্যবসা কর্মকর্তা ডিএমডি দেবকর দে শুভ (৩২), নাজিম উদ্দিন আসিফ (২৮), এজিএম হেড অব অ্যাকাউন্টস সাফোয়ান আহমেদ (৪১), ডেপুটি ম্যানেজার আমিরুল হোসাইন (৪৬), আসিফ চিশতী (২৬), সিস্টেম ক্যাটাগরি হেড ইমতিয়াজ হাসান (৩৫), ভাইস প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম স্বপন (৩৫) ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরোধ বারান রয় (৪৫)।
শামীম খান বলেন, গত ২০ মার্চ অনলাইনে মাইক্রোড ট্রেড, ৪৩ মহাখালী আকুয়া টাওয়ারের (লেভেল ৩ ও ৮) আওতাধীন ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড পরিচালিত ধামাকা শপিং ডটকমের ফেসবুক পেইজে বিভিন্ন ভার্চুয়াল সিগনেচার কার্ডের মাধ্যমে পণ্য কেনার অফার দেয়। অনলাইনে অফারটি দেখে আমি প্রতিষ্ঠানের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করি। যোগাযোগ করার পর আমাকে জানানো হয়, পণ্য অর্ডার করলে ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
সেই অনুয়ায়ী আমি ৮৪টি ইনভয়েসের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ইনভয়েসে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করি। প্রতিষ্ঠানটি তার অর্ডার কনফার্ম করে এবং কনফার্ম ইনভয়েস জিমেইল আইডিতে পাঠায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত ৪৫ দিনেও আমার পণ্য সরবরাহ করেনি।
৫০ দিন পর সেই হেল্পলাইনে যোগাযোগ করলে আমাকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। এক মাস অপেক্ষা করার পর তাদের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ডিরেক্টর অপারেশন স্বাক্ষরিত সাউথ ইস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার দুইটি চেক দেয়া হয়। ওই চেক নিয়ে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই।
পরে ৫ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের সিও মামলার ৩নং আসামি মো. সিরাজুল ইসলামের কাছে গেলে, তিনি টাকা না দিয়ে আমাকে হুমকি দেন। পরে ৫ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অফিসে গিয়ে দেখি অফিস তালাবন্ধ। এ থেকে বুঝতে পারি আমি তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছি। এর কিছুদিন আগে পত্রিকা ও টেলিভিশনে খবরে জানতে পারি বিপুলসংখ্যক ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠানের সামনে তাদের পাওনার জন্য অবস্থান নিয়েছেন।
আমার টাকা পরিশোধের ইনভয়েস, ব্যাংকের চেকের ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে আমার আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর দায়ের করা মামলার নম্বর হলো-১৩। এতে ধারাগুলো হলো ৪০৬/৪২০/১০৯/৫০৬ পেনাল কোড। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।