ফেসবুকে সদ্য শেষ হয়েছে ‘দেশি শাড়ির ওয়েভ’। তা আয়োজন করেছে দেশি শাড়ির ফেসবুক গ্রুপ পরিধান শৈলী। এতে অংশ নিয়েছে ২৫০ টির বেশি ফেসবুক গ্রুপ, জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সহ সাধারণ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। দেশি শাড়ির ওয়েভের বিভিন্ন দিক নিয়ে টেকজুমের সাথে কথা বলেছে পরিধান শৈলী গ্রুপের স্বাত্বাধিকারী রাকিমুন বিনতে মারুফ জয়া। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আওয়ার শেরপুর এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ দেলোয়ার হোসেন।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : দেশি শাড়ির ওয়েভ তোলার আগ্রহ কিভাবে জন্মেছে?
রাকিমুন জয়া : দেশি শাড়ির ওয়েভের আইডিয়াটা মূলত ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি রাজিব আহমেদ স্যারের। পরিধান শৈলী গ্রুপটা যখন শুরু করি নতুন গ্রুপটাকে জমজমাট রাখতে স্যার প্রতিদিন নির্দিষ্ট ধরন ও রঙের দেশি শাড়ি নিয়ে পোস্ট দেওয়ার পরামর্শ দিতেন। তখন গ্রুপের মেম্বার কম থাকলেও সবাই আনন্দ সহকারে পোস্ট দিতেন। তখন থেকেই ইচ্ছা ছিল পরবর্তীতে আবার এধরনের কিছু করবো। সে ইচ্ছা থেকেই ডিসেম্বর মাসের ১-৭ তারিখ পর্যন্ত দেশি শাড়ির সপ্তাহ পালনের আইডিয়া নিয়ে রাজিব স্যারের সাথে পরামর্শ করি। এরপর পরিধান শৈলী গ্রুপে পোস্ট দেই। রাজিব স্যার এই আইডিয়াকে ওয়েভের রুপ দেন। ২৭ই নভেম্বর পরিধান শৈলী গ্রুপে লাইভে এসে এবং একটি পোস্টের মাধ্যমে রাজিব স্যার দেশি শাড়ির ওয়েভের ডাক দেন। এতে ২৫০ টির বেশি ফেসবুক গ্রুপ অংশ নিয়েছে।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : এই ওয়েভ থেকে প্রত্যাশা কি ছিল?
রাকিমুন জয়া : আমাদের দেশি শাড়ির কন্টেন্টে খুবই কম। এই ওয়েভ থেকে প্রধান প্রত্যাশা ছিল দেশি শাড়ির কন্টেন্ট বাড়ানো। এই ওয়েভে দেশি শাড়ি নিয়ে অডিও, ভিডিও, ছবি সহ প্রচুর তথ্যমূলক পোস্ট প্রত্যাশা ছিল। এছাড়াও প্রত্যাশা ছিল ছোট ছোট বিজনেস গ্রুপগুলো একত্রিত হয়ে দেশি পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করবে, অনলাইনে দেশি শাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়বে।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : ওয়েভে কেমন সাড়া পেয়েছেন?
রাকিমুন জয়া : এই ওয়েভে অবিশ্বাস্য সাড়া পেয়েছি। রাজিব স্যারের ডাকে ২৫০ টির বেশি ফেসবুক গ্রুপে একযোগে এই ওয়েভ পালিত হয়েছে। ওয়েভকালীন সময়ে সবগুলো গ্রুপের একটিভিটি ও পোস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিধান শৈলী গ্রুপে কয়েকজন এই সাতদিনে গড়ে ২০০-৩০০ টি করে পোস্ট দিয়েছে। আমি আশাবাদী বিক্রিও খুব ভালো হয়েছে। ফেসবুক গ্রুপগুলোর বাইরেও নিজের প্রোফাইলে পালন করেছে দেশি শাড়ির ওয়েভ।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : ওয়েভে অপ্রত্যাশিত পাওনা গুলো কি কি ছিল?
রাকিমুন জয়া : ওয়েভে অপ্রত্যাশিত পাওনা ছিল এত গুলো গ্রুপ একত্রিত হয়ে ওয়েভ পালন করেছে। ফেসবুক গ্রুপের বাইরে নিজ প্রোফাইলে জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী রোমানা মোর্শেদ কনক চাঁপা আপুর সমর্থন। আমি তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। এর পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাতে চাই ওয়েভে অংশগ্রহনকারীদের গ্রুপগুলোর এডমিন ও মেম্বারদের।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : শাড়ির ওয়েভের প্রভাব তাঁত পাড়ায় কেমন পড়বে বলে মনে করেন?
রাকিমুন জয়া : এই ওয়েভের ফলে দেশি শাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি। দেশি শাড়ি চলে না, তাতীঁদের এমন আফসোস ঘুচবে। তাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। একসময় এমন হবে যে, শাড়ি বুনে তারা ফুরসৎ পাবেন না। তাতেঁর সংখ্যা ও কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। আরো অনেক ধরনের তাঁতের শাড়ি তারা আগ্রহের সাথে বুনবে। আশা করি চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে তারা ন্যায্য মজুরিও পাবে।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : ভবিষ্যতে ওয়েভের ব্যপারে কি চিন্তা করবেন?
রাকিমুন জয়া : যেহেতু এ ওয়েভ সফল হয়েছে তাই ইচ্ছা আছে আগামীতেও দেশি শাড়ি নিয়ে এধরনের ওয়েভ পালন করার। আসলে দেশি শাড়ি নিয়ে আমরা যত বেশি প্রচার করবো ধীরে ধীরে এর বাজার তৈরি হবে, জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। আরো কিছু পরিকল্পনা আছে, যা শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যারের সাথে পরামর্শক্রমে বাস্তবায়ন করবো ইনশাল্লাহ।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : যারা ওয়েভে অংশগ্রহণ করেছে তাদের কে কিছু বলতে চান?
রাকিমুন জয়া : ওয়েভে অংশগ্রহণকারী সকলকে সাধুবাদ ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে এভাবে যদি সম্মেলিত ভাবে দেশি পণ্যের কাজ করা যায়, তাহলে এই ইন্ডাস্ট্রি কর্মসংস্থান ও দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে। আশা করি পরবর্তীতে দেশি শাড়ির পাশাপাশি অন্যান্য দেশি পণ্যের প্রচারনা ও কন্টেন্ট তৈরিতে যেন আমরা এভাবেই আগ্রহী হই।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন : টেকজুম কে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
রাকিমুন জয়া : ’দেশি শাড়ির ওয়েভ’ সমর্থন করার জন্য টেকজুম কেও আন্তরিক ধন্যবাদ। ওয়েভে অংশগ্রহণকারী সকল এডমিনদের মন্তব্য টেকজুমের প্রচার করার কারণে দেশি পণ্যের কনটেন্ট যেমন বেড়েছে, তেমনি অনেক এডমিন আনন্দিত হয়েছে। আশাকরি দেশি পণ্যের সকল কার্যক্রমে টেকজুম এই ভাবে পাশে থাকবে।