বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপ প্রাইভেট মার্কেটপ্লেস গড়ে তুলতে যাচ্ছে, যেখানে একই সঙ্গে সব ধরণের পণ্য বিজনেস-টু-বিজনেস ও বিজনেস-টু-পারসন কেনাবেচা ছাড়াও বার্টার, অকশন, গুদামজাতকরণ ও সিকিউরিটিজ লেনদেনের সুযোগও থাকবে। অ্যামাজন বা আলিবাবার মতোই; তবে পণ্য বিনিময় এবং নিলামের মতো অনেক বেশি সুবিধাসম্পন্ন হবে। যে কোন ব্যক্তি তার সামর্থ অনুযায়ী বিনিয়োগ করে এই প্লাটফর্মে পণ্য কিনতে পারবেন। পরে যখন ওই পণ্যের দাম বাড়বে, তখন তিনি তা চাইলে আবার বিক্রি করে লাভবানও হতে পারবেন।
‘এবিজি মার্কেটপ্লেস’ নামে একটি গ্লোবাল মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠার অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বিষয়টি জরুরিভাবে দেখভালের জন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ই-কমার্স নির্দেশিকা মেনে মার্কেটপ্লেস ব্যবসা শুরু করার অনুমতি দিয়ে চলতি সপ্তাহেই বসুন্ধরা গ্রুপকে চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বসুন্ধরা গ্রুপ আশা করছে, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও অনুমোদন নেওয়ার পর আগামী ৬ মাসের মধ্যে মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠার কাজ দৃশ্যমান হবে। মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠায় ইতোমধ্যে এবিজি লিমিটেড নামে একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি গঠন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ, যার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন গ্রুপটির এমডি সায়েম সোবহান আনভীর।
এবিজি মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠার অনুমোদন চেয়ে গত ১৬ মার্চ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কাছে আবেদন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এটি প্রতিষ্ঠা পেলে কৃষক, উৎপাদনকারী, মধ্যম আয়ের জনসাধারণ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, কর্মহীন জনগোষ্ঠীসহ সর্বস্তরের জনগণ উপকৃত হবে বলে জানিয়েছে গ্রুপটি।
এবিজি লিমিটেডের আওতাধীন এবিজি মার্কেটপ্লেস নামে একটি প্রাইভেট মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা চেয়েছে গ্রুপটি।
শাহরিয়ার মোল্লা বলেন, আলিবাবা, অ্যামাজন মূলত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এবিজি মাকের্টপ্লেস হবে এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে বিটুবি এবং বিটুপি পণ্য কেনাবেচা করা ছাড়াও বার্টার ও ইনভেস্টমেন্টের সুযোগ থাকবে। অর্থাৎ, যে কোন ব্যক্তি তার সামর্থ অনুযায়ী ৫০০ বা ১০০০ টাকা বিনিয়োগ করে এই প্লাটফর্মে পণ্য কিনতে পারবেন। পরে যখন ওই পণ্যের দাম বাড়বে, তখন তিনি তা চাইলে আবার বিক্রি করে লাভবানও হতে পারবেন।
দেশ-বিদেশের সকল ব্রান্ড এই মার্কেটপ্লেসে যুক্ত হতে পারবে। এই মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করে দেশি পণ্য ও সেবার পাশাপাশি বিদেশি পণ্যও কেনা, আবার বাংলাদেশি পণ্য ও সেবা বিদেশি ক্রেতাদের কাছেও সরবরাহ করা যাবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেবো আমরা।
প্রস্তাবিত মার্কেটপ্লেস যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ানগোল্ড-এর মতো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এবিজি মার্কেটপ্লেসে লেনদেন হওয়া সব পণ্যের বীমা করা থাকবে। অফিস স্টাফ, পণ্যের ক্রেতা-বিক্রেতা, বিনিয়োগকারী, ডেলিভারিম্যানসহ প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ করে কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করছি আমরা।
বসুন্ধরা গ্রুপের কর্মকর্তারা জানান, একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠা করা একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অনুমোদন নিয়ে আগামী ৫-৬ মাসের মধ্যে মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠার কাজ পুরোদমে শুরু হবে। প্রথম থেকেই এই মার্কেটপ্লেসে ড্রাগ, গোল্ডসহ সব ধরণের পণ্য ও সেবা থাকবে। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিদেশিরাও এখানে বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে বাংলাদেশিদের অগ্রাধিকার থাকবে।