বিশ্বের জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে কাবাব অন্যতম। স্ট্রিটফুড কার্ট থেকে শুরু করে বিলাসবহুল রেস্তোঁরা পর্যন্ত সর্বত্র মিলে কাবাব। বর্তমানে এফ-কমার্সেও বিস্তার ঘটেছে কাবাবের। বহুরকম কাবাবের মধ্যে কয়েকটি বেশ জনপ্রিয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো- শিক কাবাব, গ্রিল কাবাব, শামী কাবাব, জালি কাবাব, টাংরি কাবাব, ছাড়গা কাবাব, চাপলি কাবাব ইত্যাদি।
কাবাব মধ্যপ্রাচ্যের একটি খাবার হলেও এর পরিচিতি ও ব্যবহার ছড়িয়েছে বিশ্বাজুড়ে। আমেরিকাতেও রয়েছে কাবাবের ব্যবহার। ৯ই জুলাই বিশ্বজুড়ে পালিত হয় কাবাব দিবস। বাংলাদেশের সব প্রান্তেই রয়েছে ব্যবহার। পিছিয়ে নেই অনলাইনেও। সম্প্রতি ফেসবুকে পালিত হয়েছে কাবাব ওয়েভ। প্রায় শাতাধিক উদ্যোক্তার বিক্রি হয়েছে ২১ হাজারের বেশি কাবাব। উদ্যোক্তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বলে তাদের কথা তোলে ধরা হয়েছে-
কাবাব ওয়েভের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাটারফ্লাই লাইফস্টাইলের স্বত্বাধিকারী রোকাইয়া চৌধুরী তন্বী টেকজুমকে বলেন, ”দিনাজপুর থেকে এই ওয়েভে কাবাব নিয়ে কাজ শুরু করেছি অনলাইনে। কোনরকম বিনিয়োগ ছাড়াই কাবাব নিয়ে শুরু হলো আমার পথচলা। ক্রেতারা অর্ডার ও অগ্রিম বিল পরিশোধ করার কারণে সেই অর্থ বিনিয়োগ করে সম্পন্ন করেছি ডেলিভারি। কাবাব ওয়েভে মাত্র দুই দিনে তন্বীর বিক্রি হয়েছে ৭০০-এর বেশি কাবাব। ওয়েভ শেষ হলেও থেমে নেই তন্বীয় অর্ডার। এ জন্য তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি রাজিব আহমেদকে।
মোসাদ্দিকা লিজা একজন খাবারের উদ্যোক্তা। উদ্যোগের নাম এলিজা’স ফুড গ্যালারী। কাবাব ওয়েভের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “শুরুতে কৃতজ্ঞতা জানাই ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)-এর সাবেক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজিব আহমেদ স্যারকে। স্যার ডাক দেন এই ওয়েভের। আমি কল্পনাও করিনি ওয়েভে ১৭০০ এর বেশি কাবাব বিক্রি হবে।“ লিজা আরও বলেন, আমাকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে পার্সোনাল ফেসবুক প্রোফাইল, দেশি পণ্যের ছোট গ্রুপ এবং আরিফা মডেল।” ওয়েভকালীন সময়ে (৫ দিনে) কোন রকম মার্কেটিং বা বিজ্ঞাপন ছাড়াই লিজার বিক্রি হয়েছে ১০৮,৭২১ টাকা। কাবাবের সাথে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য খাবারও। টাকার অংকে যার পরিমাণ ৩৫-৪০ হাজার টাকার মতো। সব মিলিয়ে তিনি ওয়েভে বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বেশি মূল্যের খাবার।
সব ধরনের হোম মেড খাবার নিয়ে অনলাইনে কাজ করেন শর্মিলি আক্তার। তার উদ্যোগের নাম ফুড প্যালেস বাই শারমি। কাবাব ওয়েভে অংশগ্রহণ করেছেন তিনিও। ওয়েভে প্রাপ্তি খাতায় যুক্ত হয়েছে অফুরন্ত। তিনি মনে করেন এই ওয়েভ ছিল খাবারের উদ্যোক্তাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। শর্মিলির বিক্রি হয়েছে ৭০০ এর বেশি কাবাব। সেই সাথে বেড়েছে পরিচিতি, কাস্টমার, সেলস ও রিভিউ।
কাবাব ওয়েভে ৬০০ এর বেশি কাবাব বিক্রি করেছেন রোজী’স কুকিং হাউজের স্বত্বাধিকারী সোনিয়া আফরোজ রোজী। কেবল কাবাবই নয় বিক্রি হয়েছে রোজীর নারকেল দুধের হাসের মাংস, ছিটারুটি, মোমোসহ অন্যান্য খাবার। তিনি ক্রেতা পেয়েছেন সিলেট থেকেও।
কাবাব ওয়েভ নিয়ে সানজিদা’স ডাইনের স্বাত্বাধিকারী সানজিদা আফরিন বলেন, “উদ্যোক্তা জীবনে এই প্রথম কোনো খাবার ওয়েভে অংশগ্রহণ করলাম। ২১ হাজারের বেশি কাবাব বিক্রির খবর মিলেছে। এর মধ্যে কেবল আমারই ১৪শ এর বেশি কাবাব বিক্রি হয়েছে ৬১ জন ক্রেতার কাছে। এতে প্রয়োজন হয়নি কোন প্রকার মার্কেটিং ব্যয়।” তিনি আরও বলেন, “এই ওয়েভে কেবল বিক্রিই নয় পাচ্ছি প্রচুর ক্রেতার গল্প ও রিভিউ। এরফলে দিনে দিনে বাড়ছে অর্ডার ও নতুন নতুন কাস্টমার।