ই-কমার্সের দিক থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩১ তম, কোন কোন পরিসংখ্যানে আবার ৩৬তম। একেবারে শূন্য থেকে যাত্রা করা এই ব্যবসা যে দারুণ সম্ভাবনাময় তা অস্বীকার করার কোনো অবকাশই নেই। ইউএনবি এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশের ই-কমার্স এর বাজার ছিলো প্রায় ৫৬৮.৭০ বিলিয়ন টাকা, যা ২০২২ এ প্রায় ৬৬০ বিলিয়ন টাকায় পৌঁছায়। শুধু তাই নয়, আশা করা হচ্ছে ২০২৬ সালের মধ্যে দেশের ই-কমার্স বাজার প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন টাকায় পৌঁছোবে। এটুকু জানার পর এখন আপনারা ধারণা করতে পারছেন আমাদের দেশের ই-কমার্স খাতের ভবিষ্যৎ কতটুকু সম্ভাবনাময় হতে পারে।
বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত বর্তমানে দ্রুতগতিতে উন্নতি করছে এবং এর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে। এখানে এই খাতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:
বর্তমান অবস্থা:
প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। ২০২১ সালে এই খাতের বাজার ছিল প্রায় ৫৬৮.৭০ বিলিয়ন টাকা, যা ২০২২ সালে ৬৬০ বিলিয়ন টাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৬ সালের মধ্যে এই বাজার ১.৫ ট্রিলিয়ন টাকায় পৌঁছাবে।
জনপ্রিয়তা: শহরাঞ্চল থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলেও এখন অনলাইন শপিংয়ের প্রবণতা বাড়ছে। মানুষ ঘরে বসেই বিভিন্ন পণ্য ও সেবা কিনতে পছন্দ করছে।
স্মার্টফোনের ব্যবহার: বাংলাদেশে স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ই-কমার্স খাতের প্রসার আরও দ্রুত হচ্ছে। এখন প্রায় ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে এবং তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনলাইন শপিংয়ের সাথে জড়িত।
সম্ভাবনা:
বাজারের সুযোগ: বাংলাদেশের ই-কমার্স বাজারের এখনও অনেকটা অংশ অব্যবহৃত রয়েছে। মাত্র ১.৩ শতাংশ মানুষ বর্তমানে অনলাইন শপিং করে। তাই, এই খাতে প্রবৃদ্ধির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
তরুণ প্রজন্ম: বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোন ব্যবহারে খুবই আগ্রহী। এই কারণে, ই-কমার্স তাদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে।
ডিজিটাল অবকাঠামো: সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নত হচ্ছে, যা ই-কমার্স ব্যবসায়ের জন্য সহায়ক।
চ্যালেঞ্জ:
বিশ্বাস ও নিরাপত্তা: এখনও অনেক মানুষ অনলাইন লেনদেন এবং পণ্য ও সেবার গুণমান নিয়ে সন্দিহান। এই বিশ্বাসের অভাব ই-কমার্স খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
লজিস্টিক সমস্যা: বাংলাদেশে ভালো লজিস্টিক এবং ডেলিভারি সিস্টেমের অভাব রয়েছে, যা প্রায়ই ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের জন্য সমস্যা তৈরি করে।
ডিজিটাল জ্ঞান: অনেকের মধ্যে ডিজিটাল জ্ঞান এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের দক্ষতা কম। এর ফলে, তারা অনলাইন শপিংয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না।
ভবিষ্যৎ:
উন্নতি ও প্রবৃদ্ধি: আশা করা যায়, আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাত আরও অনেক উন্নতি করবে। প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং মানুষের মধ্যে অনলাইন শপিংয়ের আগ্রহ বাড়ার সাথে সাথে এই খাত আরও প্রসারিত হবে।
নতুন সুযোগ: ই-কমার্স খাতে নতুন নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সামগ্রিকভাবে, বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনা এবং উদ্যোগের।