নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি রয়েছে বিশ্বের অর্ধেকের মতো মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। ব্যবসায়িক ও অফিশিয়াল কাজ অনেকেই ঘরে বসেই সেরে ফেলছেন। এজন্য ইন্টারনেট আর প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ফলে প্রযুক্তি যন্ত্রাংশের চাহিদাও করোনাকালে বেড়েছে। এতে লাভবান হচ্ছে খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান লজিটেক ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, কোম্পানির অর্থবছরের সর্বশেষ প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) তাদের বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বেড়েছে। খবর রয়টার্স।
লুজান ও ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, করোনা সংকটের কারণে ঘরে বসে মানুষ প্রযুক্তিনির্ভর কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এতে করে প্রযুক্তিপণ্যের চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রিও বেড়েছে। গতকাল প্রকাশিত প্রান্তিক হিসেবে দেখা গেছে, অর্থবছরের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ কোটি ৯২ লাখ ডলারে। গত বছরের একই সময়ে যেখানে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে তাদের আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত লজিটেক প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বব্যাপী ব্যবসা রয়েছে। মূলত ওয়েবক্যামেরা, কীবোর্ড, মাউস, ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের সরঞ্জামাদি ও সফটওয়্যার তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। মার্চে শেষ হওয়া কোম্পানি অর্থবছরের সর্বশেষ এ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির নন-জিএএপি পরিচালন আয় গত বছরের তুলনায় ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
পুরো অর্থবছর হিসেবে এক বছরে প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি বেড়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। আর বার্ষিক নন-জিএএপি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন আয় দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারে, যা প্রতিষ্ঠানটির আয়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। মার্চে শেষ হওয়া এ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ কোটি ৫০ লাখ থেকে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের মধ্যে। এর আগে দেয়া প্রাক্কলন তথ্যে প্রতিষ্ঠানটি পুরো অর্থবছরে মুনাফা কমে যাওয়ার বিষয়ে জানিয়েছিল। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সরবরাহ চেইনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে বলে সে সময় জানায় প্রতিষ্ঠানটি। যদিও মরণঘাতী ভাইরাসটি কোম্পানিটির সার্বিক ব্যবসার ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
লজিটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রাকেন ড্যারেয়লও মনে করেন কোম্পানির প্রথাগত পণ্য বিক্রিতে মহামারীর ফলে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। তিনি বলেন, ভিডিও কনফারেন্সিং, দূরে বসে কাজ সম্পন্ন, আধেয় তৈরি করা, গেমিংসহ অন্যান্য প্রযুক্তি সরঞ্জাম নিয়েই আমাদের ব্যবসা। তবে মহামারীটির ফলে এসব পণ্যের বিক্রিতে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি, বরং বিক্রি বেড়েছে।
মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও লজিটেক বিক্রি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরেরও পণ্য বিক্রিতে লজিটেক সিঙ্গেল ডিজিটের মাঝামঝি সংখ্যার প্রবৃদ্ধি ধরে রাখবে। এছাড়া চলতি অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি ৩৮ কোটি থেকে ৪০ কোটি ডলার পরিচালন মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হবে।