শিশু নিপীড়নমূলক ছবির জন্য আইফোন স্ক্যানের পরিকল্পনা রয়েছে অ্যাপলের। কথা ছিলো, এ বছরের শেষ নাগাদ চলে আসবে টুলটি। কিন্তু সম্প্রতি সে পরিকল্পনা পিছিয়ে দিয়েছে তারা। এখন এটি আসবে ‘আরও দেরিতে’।
তীব্র সমালোচনার পরপরই নতুন সিদ্ধান্ত জানালো অ্যাপল। অ্যাপলের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে জোরদার সমালোচনা করেছিল গোপনতা সমর্থক ও অন্যান্য অধিকারকর্মীরা। শঙ্কা ছিল, বিপজ্জনক নজির তৈরি করবে অন-ডিভাইস ট্র্যাকিং। অ্যাপল সম্প্রতি জানিয়েছে, তারা সে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আমলে নিয়েছে এবং গোটা বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করছে।
বিবিসি’র প্রতিবেদন বলছে, সিস্টেমটি স্বৈরাচারী সরকার ব্যবহার করতে পারে এমন উদ্বেগও ছিলো।
সাধারণত স্ক্যান বলতে যা বুঝায়, অ্যাপল সেভাবে মার্কিন ব্যবহারকারীর আইফোন স্ক্যান করবে না বলেই জানিয়েছিলেন অ্যাপলের সফটওয়্যার প্রধান ক্রেইগ ফেডেরিঘি।
মূলত ‘নিউরালহ্যাশ’ প্রযুক্তির মাধ্যমে আইক্লাউড ফটোসে ছবি আপলোড হওয়ার আগে তা স্ক্যান করে দেখার পরিকল্পনা ছিল মার্কিন এ প্রযুক্তি জায়ান্টের। এরকম স্ক্যানিংয়ে আদতে ছবি দেখার বদলে, তাতে থাকা সংখ্যাসূচক কোড স্ক্যান করতো প্রতিষ্ঠানটি।
‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েটেড চিলড্রেন’ -এর শিশু হয়রানিমূলক ছবির একটি ডেটাবেজ রয়েছে, সেখানে সংস্থাটি সংখ্যাসূচক কোডে বা হ্যাশে ছবি সংরক্ষিত থাকে।
অ্যাপল নিজ ডিভাইসে ছবির সংখ্যাসূচক কোডের সঙ্গে ওই ডেটাবেজের সংখ্যাসূচক কোড মিলিয়ে দেখার কথা ভেবেছিল। এ ছাড়াও কোনো ছবির সংখ্যাসূচক কোড ডেটাবেজের সঙ্গে মিলে গেলে ব্যক্তি পর্যালোচনা শেষে অ্যাকাউন্ট ডিজএবল করে দেওয়া বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিত মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও জানিয়েছিল।
এক বিবৃতিতে অ্যাপল জানিয়েছে, “গত মাসে আমরা এক ফিচারের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ঘোষণা দিয়েছিলাম যা শিশুদেরকে সেই সব শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতো যারা যোগাযোগ টুল ব্যবহার করে তাদেরকে বাগে আনে এবং সুযোগ নেয়, এবং এ ধরনের উপাদানের ছড়িয়ে পড়াকেও সীমিত করতো।”
“গ্রাহক, সমর্থক গোষ্ঠী, গবেষক এবং অন্যান্যদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে, এই গুরুত্বপূর্ণ শিশু সুরক্ষা ফিচার আনার আগে আমরা মতামত সংগ্রহ এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী মাসগুলো বাড়তি সময় হিসেবে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” – যোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গোপনতা সমর্থকরা শুরু থেকেই উদ্বেগ জানিয়ে আসছিলেন ফিচাটি নিয়ে। এ নিয়ে জোরালো প্রশ্নকারীদের তালিকায় ‘দ্য ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ারস ফাউন্ডেশন’ নামটি অন্যতম। সংস্থাটির এক পিটিশনে ২৫ হাজার গ্রাহক এ অ্যাপলের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে স্বাক্ষর করেছেন।
অ্যাপল সব সময়ই গোপনতা ও এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের পক্ষে কথা বলে এসেছে। গোপনতার বিষয়টি উল্লেখ করে ব্যবসায়িক প্রচারণা চালানোর নজিরও রয়েছে অ্যাপলের।