ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল যুগে প্রচলিত ব্যবসা-বাণিজ্য অনিবার্য কারণেই ডিজিটাল বাণিজ্যে রূপান্তরিত হবে। ডিজিটাল যুগ হবে ক্যাশল্যাস সোসাইটির যুগ। এরই ধারাবাহিকতায় কাগজের সভ্যতা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। সামনের দিনে প্রাকৃতিক ও প্রযুক্তিগত কারণে কাগজ বলে কিছু থাকবে না বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে ডিজিটাল প্লাটফর্মে ই-ক্যাব আয়োজিত ঈদ আড্ডায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন মন্ত্রী।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল কমার্সকে বাণিজ্যখাত হিসেবে গড়ে তুলতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতাই বলে যেকোনো খাত গড়ে তুলতে বাণিজ্যিক সংগঠন অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের বৈপ্লবিক পরিবর্তনে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) উদ্যোগ তুলে ধরেন বিসিএস এর সাবেক এই সভাপতি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, মাত্র ৩৬ সদস্যের বিসিএস এর মাধ্যমে ৯৮-৯৯ সালে কম্পিউটারের ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারের মাধ্যমে কম্পিউটার জনগণের কাছে সহজলভ্য করার প্রচেষ্টা বিসিএস এর সমন্বিত উদ্যোগের ফসল। বাণিজ্যিক প্লাটফর্ম হিসেবে ই-ক্যাবকেও অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান ই-ক্যাব প্রতিষ্ঠার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাণিজ্য তো দূরের কথা ই-কমার্স বোঝার লোক ছিল না এক সময়। কিন্তু করোনাকালে আপনারা দেখিয়ে দিয়েছেন গরুর হাট পর্যন্ত অনলাইনে হতে পারে।
ই-ক্যাবকে দেশে ডিজিটাল কমার্স রূপান্তরের অগ্রণী সৈনিক হিসেবে আখ্যায়িত করে মন্ত্রী বলেন, গ্রাহকরা যাতে কোনোভাবেই প্রতারিত না হয় সেদিকে ই-ক্যাবকে আরও সচেষ্ট হতে হবে। সুযোগ যেখানে থাকবে অপরাধীরা সেখানে অপরাধ করবে-সেটা প্রতিটি ক্ষেত্রেই। এটা বিক্রেতার পাশাপাশি ক্রেতার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কাজেই ডিজিটাল অপরাধ ডিজিটাল প্রযুক্তি দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। যে যত বেশি ডিজিটাল দক্ষ হবে সে তত বেশি ব্যবসায় সফল হবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সদস্যদের দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে ই-ক্যাবকে কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানান।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহাব তমালের সঞ্চালনায় ই-ক্যাবের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন। তারা ই-ক্যাব ও ডিজিটাল বাণিজ্য বিষয়ক বিভিন্ন প্রসঙ্গ আলোচনা করেন। একজন বক্তা ইন্টারনেটের গুণগতমান উন্নত হওয়ার বিষয়ে প্রশংসা করে জানান, তিনি প্রত্যন্ত এলাকা থেকে জুমে এই সভায় অংশ নিতে পারছেন। তিনি করোনাকালে ইন্টারনেটের সচল সজীব থাকারও প্রশংসা করেন।
শমী কায়সার কোভিডকালে ডিজিটাল কমার্সের অভাবনীয় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করেন। তিনি ডিজিটাল কমার্সকে শিল্পখাত হিসেবে ঘোষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।