ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে আগামী অর্থবছরে ল্যাপটপ আমদানি শুল্ককর কমানো হচ্ছে। দেশের বাজারে রিফার্বিশড ও নকল পণ্যের প্রবেশ প্রতিরোধ করা এবং স্থানীয় ফ্রিল্যান্সার ও সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সহায়তায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অপরদিকে স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য উৎপাদনে দেওয়া কর অব্যাহতির সুবিধা আরো সংকোচনের পথে হাটছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় শিল্পের বিকাশে ২০২৩-২৪ বাজেটে ল্যাপটপ-কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। ফলে হবে। আমদানিকারকদের বর্তমানে ল্যাপটপ আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্কসহ বর্তমানে ল্যাপটপে আমদানি মোট ৩১ শতাংশ শুল্ককর দিতে হয়। তবে নতুন ২০২৪-২৫ বাজেটে এ পণ্যটিতে শুশুল্ককর ১০ শতাংশ কমিয়ে ২০.৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করেন, এই কর হ্রাস ২০৪১ সালের মধ্যে সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
তবে জাতীয় বাজেটের অর্থ সংস্থানে ভ্যাট আদায় বাড়াতে নানা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোন, ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য উৎপাদনে দেওয়া কর অব্যাহতির সুবিধা আরো সংকোচন করার পরিকল্পনা নিয়েছে এনবিআর। এরই অংশ হিসেবে ইলেকট্রনিকস খাতে উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটহার বাড়িয়ে রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনসহ ইলেকট্রনিকস পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটের হার পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে। রেফ্রিজারেটরের ভ্যাটহার ৫ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ এবং এয়ারকন্ডিশনে নতুন করে বসছে ৫ থেকে ১০ শতাংশ।
একইভাবে রাইড শেয়ারে আরোপিত সাড়ে সাত শতাংশ ভ্যাট বাড়িয়ে এবার ১৫ শতাংশ করা হতে পারে। এতে রাইডে চড়ার খরচ বাড়তে পারে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটে সরকার রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর প্রথম মূল সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপ করে। তখন ৭ শতাংশ হারে মূসক বা ভ্যাট আরোপ করা হয় রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর। পরে সংশোধন করে তা ৫ শতাংশ করা হয়। এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাইড শেয়ারিং অ্যাপস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্ত টাকার উপরই শুধু ভ্যাট বসবে। চালকের প্রাপ্ত ভাড়ার টাকার ওপর কোন ভ্যাট বসবে না। ভ্যাট যাত্রীদের দেওয়া ভাড়ার উপর বসবে না। ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি ‘রাইড শেয়ারিং’ নীতিমালা সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার। ব্যবসা শুরুর আগে রাইড শেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের নামে বিআরটিএ থেকে ‘এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট’ এবং মোটরযানের মালিকের নামে ‘রাইড শেয়ারিং মোটরযান এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেট’ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয় নীতিমালায়। নীতিমালা হওয়ার সেবা দিতে ১২টি কোম্পানি এনলিস্টমেন্ট সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করে। ২০২২ সাল পর্যন্ত বিটিআরসি ১৫টি প্রতিষ্ঠানকে এই লাইসেন্স দেয়। এর মধ্যে রয়েছে- পিকমি লিমিটেড, কম্পিউটার সিস্টেম নেটওয়ার্ক লিমিটেড, ওভাই সলিউশনস লিমিটেড, চাল ডাল লিমিটেড, পাঠাও লিমিটেড, ইজিয়ার টেকনোলজিস লিমিটেড, আকাশ টেকনোলজি লিমিটেড, সেজেপ্টা লিমিটেড, সহজ লিমিটেড,উবার বাংলাদেশ লিমিডেট, বাডি লিমিটেড, আকিজ অনলাইন লিমিটেড, যাত্রী সার্ভিসেস লিমিটেড, ডিজিটাল রাইড লিমিটেড ও এশিয়ান ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক লিমিটেড।