মাইক্রোসফট, এনভিডিয়াকে ছাড়িয়ে বিশ্বের প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে অ্যাপলের বাজার মূল্য ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে গত মঙ্গলবার। দিনের লেনদেন শেষে প্রতি শেয়ারের দাম ০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২২৮.৬৮ ডলার, আর তাতেই অ্যাপলের মোট বাজার মূল্য পৌছে যায় ৩.৫০৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
এর আগে অ্যাপল ইনকরপোরেশন বিশ্বের প্রথম ১ ট্রিলিয়ন, ২ ট্রিলিয়ন ও ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রতিষ্ঠান হওয়ার গৌরবও অর্জন করেছিলো যথাক্রমে ২০১৮, ২০২০ ও ২০২৩ সালে। তবে এবারের এই অর্জনের তাৎপর্য কিছুটা ভিন্ন- কেননা এর মূলে রয়েছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে চলমান প্রতিযোগিতার প্রভাব।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি প্রতিষ্ঠান হওয়ার দৌড়ে অনেক দিন ধরেই অ্যাপলের একমাত্র প্রতিযোগী ছিলো মাইক্রোসফট। কিন্তু সম্প্রতি আরেক মার্কিন টেক জায়ান্ট এনভিডিয়া শক্ত প্রতিপক্ষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বিশেষ করে এআই চিপ তৈরিতে প্রায় সকলের ধরাছোঁয়ার বাইরে এখন জনপ্রিয় জিপিইউ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি গত মাসে (জুন) একটা সময় অ্যাপল, মাইক্রোসফটকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে দামি প্রতিষ্ঠান হিসেবে শীর্ষেও অবস্থান করেছে এনভিডিয়া।
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তির উন্নয়নে মাইক্রোসফটও ইতোমধ্যেই প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে, এখনও করছে। সামনের দিনগুলোতেও বিনিয়োগের এই ধারা অব্যাহত থাকবে, এমন দাবীও তাদের প্রায়শই শোনা যায়।
এআই নিয়ে তৎপরতার দিক থেকে অ্যাপল কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও গত মাসে ‘অ্যাপল ইন্টেলিজেন্স’ প্ল্যাটফর্মটি উন্মোচনের মাধ্যমে এআই-প্রতিযোগিতায় বেশ জোরেশোরেই যোগ দেয় জনপ্রিয় এই স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। আর তার পর থেকেই পুঁজি বাজারে তাদের শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করে। তবে অ্যাপলের এই সাফল্যের পেছনে এটিই একমাত্র কারন নয়।
বৈচিত্র্যময় পণ্য ও সেবা এবং তাতে নিত্যনতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহার- এই হলো বছরের পর বছর বাজারে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার পেছনে অ্যাপলের মূলমন্ত্র। আইফোনের পাশাপাশি অ্যাপলের রয়েছে জনপ্রিয় স্মার্টওয়াচ, আছে অ্যাপল মিউজিক ও অ্যাপল টিভি+ এর মতো দারুন সব সার্ভিসও।
সার্বিকভাবে অ্যাপল তাদের আইওএস-ভিত্তিক ইকোসিস্টেমে অভ্যস্ত ইউজারদের বছরের পর বছর সাফল্যের সাথে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের প্রিমিয়াম সেবা প্রদানের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক সংখ্যাও বৃদ্ধি করে গেছে।
তবে বিশ্বের দামী প্রতিষ্ঠানের খেতাবটি আপাতত অ্যাপলের অধীনে থাকলেও মাইক্রোসফট ও এনভিডিয়া খুব বেশি পিছিয়ে নেই। এখন দেখার বিষয়, সামনের দিনগুলোতে এআই নিয়ে প্রতিযোগিতা কোন দিকে মোড় নেয় এবং তার প্রভাব পুঁজি বাজারে কতটা প্রতিফলিত হয়।