ঢাকার জুরাইনে জন্ম আর বেড়ে ওঠা উম্মে সাহেরা এনিকার।ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। ২০০৮ এ মা’কে হারান।২০১২ তে কর্মজীবনে পদার্পণ করেন। বর্তমানে তিনি চাকরী ছেড়ে পুরোদস্তুর দেশীয়পণ্যের উদ্যোক্তা। বর্তমানে পুরান ঢাকার নারিন্দা থেকেই নিজের উদ্যোগ তেজস্বী নিয়ে কাজ করছেন এনিকা। এনিকার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন। উম্মে সাহেরা এনিকার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন মেহজাবীন রাখী।
টেকজুমঃ একদম শুরুর গল্পটা জানতে চাই।
এনিকাঃ শিক্ষকতা পেশা হিসেবে বেছে নিলেও মনে মনে স্বপ্ন দেখতাম নিজের একটা আলাদা পরিচয় হবে। আমার সন্তানেরা তাদের মা কে নিয়ে গর্ববোধ করবে। সেই লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২৬শে আগস্ট মাত্র ১৫০০ টাকা নিয়ে শুরু হয় আমার তেজস্বীর যাত্রা। সৌভাগ্যক্রমে সেই দিনই উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম(উই) এর সাথে পথ চলা শুরু। সত্যি কথা বলতে গেলে ঐ একটি সিদ্ধান্ত আমার জীবনের পাল্টে দেয়।
টেকজুমঃ ই-কমার্স বিজনেসকে কেন পছন্দ করলেন নিজের ক্যারিয়ারে?
এনিকাঃ ই-কমার্স বিজনেসে আসার প্রথম ও প্রধান কারন সন্তান ও পরিবারকে সময় দিয়ে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। প্রথম দিকে অল্প বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করা যায় এবং বিজনেসে ঝুঁকি ও কম থাকে। আমি আমার পণ্যকে বিশ্বে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আর এ স্বপ্ন পূরণে ই-কমার্সের কোন বিকল্প নেই।
টেকজুমঃ উদ্যোক্তা জীবনের অন্তরায় গুলো কিভাবে কাটিয়ে উঠেছেন?
এনিকাঃ তেজস্বীর সিগনেচার পণ্য টাইডাই, বাটিকের সেন্ডেল তৈরী করতে আমি নানা ধরনের বাঁধা সম্মুখীন হয়েছি। নিজের কাজের প্রতি একাগ্রতা ও ধৈর্য্য আমাকে সেই বাঁধা অতিক্রম করতে সাহায্য করছে। এছাড়া আমার পাশে সবসময় আমার স্বামীকে পেয়েছি।
টেকজুমঃ তেজস্বীকে নিয়ে কেমন স্বপ্ন দেখেন?
এনিকাঃ ব্লক ও বাটিকের পণ্যকে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সহ সারাবিশ্বের মানুষের কাছে এবং বাংলাদেশের দেশীয় পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে একটি একটা শক্ত অবস্থানে দেখতে চাই। এছাড়া আমার স্বপ্ন আছে পুরান ঢাকার ই-কমার্স নিয়ে। পুরান ঢাকাতে যারা ই-কমার্সে নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন তাদের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে সেইগুলোর দিকে দৃষ্টি দেওয়ার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি। আমি আমার সাধ্যমত পুরান ঢাকার ই-কমার্স নিয়ে কাজ করতে চাই।
টেকজুমঃ এনিকার উদ্যোক্তা জীবনে উই কতোটা জুড়ে আছে?
এনিকাঃ আমার উদ্যোক্তা জীবনের পুরোটা জুড়েই উই। কারন আমার উদ্যোক্তা জীবনের প্রথম দিন থেকেই উই এর সাথে পথ চলা শুরু। তখনও আমি জানতাম না কিভাবে এক টাকা সেল করতে হয়। কিন্তু এই দশ মাসে আমার বিক্রি আড়াই লাখ টাকা। আমার উদ্যোক্তা জীবন মানেই উই। সবসময় সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে আমাকে পথ দেখানোর জন্য রাজিব আহমেদ স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ এবং নিশা আপুকে ধন্যবাদ এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরী করার জন্য।
টেকজুমঃ ধন্যবাদ এনিকা। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
এনিকাঃ ধন্যবাদ টেকজুমকেও।