বর্তমানে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর কয়েক দশক আগেও কর্মক্ষেত্রে নারীদের পদচারণা চোখে পড়ার মতো ছিলো না। কিন্তু এখন নারীরা ঘরে বাইরে সব পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা।
সামিরার এই স্বাবলম্বী হওয়ার পেছনে অবদান তাঁর নতুন উদ্যোগের। বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সামিরা। স্নাতক সমাপনী পরীক্ষা দিয়ে ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। এরই মধ্যে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আবার বগুড়ায় ফিরে আসেন তিনি। এরপর একসময় চাকরিতে ইস্তফা দেন। করোনাকাল তাঁর সামনে তখন খুলে দেয় উদ্যোক্তা হওয়ার দ্বার। সামিরা শুরু করেন অনলাইনে আচার বিক্রির ব্যবসা। উদ্যোগের নাম ‘ছায়াবৃক্ষ’। নিজে বাসায় আচার বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি শুরু করেন।
সামিরা জানান, ‘আচার দিয়ে শুরু করলেও আমার পরিকল্পনা অনেক বড়। ধীরে ধীরে অন্যান্য পণ্য নিয়েও কাজ করব। তাই এই নাম দিয়েছি। এই উদ্যোগে অন্যদেরও শামিল করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই।’
সামিরা জানান, ‘শুরুটা আসলে নিজের ইচ্ছা থেকে। আমার মা অনেক ভালো আচার তৈরি করতে পারেন। মায়ের কাছ থেকেই আচার তৈরি করা শিখি। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা থাকলেও আমার মনে হয় যে ঘরে বসে থাকার চেয়ে কিছু করলে ভালো হয়। প্রথমে বাবার থেকে কিছু টাকা দিয়ে বাজার থেকে আচার তৈরির সরঞ্জাম কিনে আনি। পরে সেগুলোতে নিজেই তৈরি করি এবং আশপাশে বিক্রি করে দিই। দেখা যায় যে ক্রেতাদের চাহিদা বেশ ভালো এবং তারা আমার আচারের অনেক প্রশংসাও করতেন।’
এই সফল উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পেছনে রয়েছে তার নিজের পরিশ্রম এবং এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। পথে পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে সামিরাকে, তবে কখনোই দমে যাননি তিনি। নিজের মেধা, মননশীলতা, কর্মনিষ্ঠা এবং একাগ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা এই খাবারের উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) এর অবদান অনেক বেশি। উই সব সময় দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের জন্য সাপোর্টিভ জোন হিসেবে কাজ করছে। ই-ক্যাব এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং ফোরামটির উপদেষ্টা রাজিব আহমেদ স্যারকে পরামর্শক হিসেবে পেয়ে আমি সত্যিই অনেক বেশি গর্বিত বোধ করি কারণ তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আমাদের মত উদ্যোক্তাদের জন্য। এই করোনাকালীন সময় শুধুমাত্র উই এর কারণে গত তিন মাসে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার পণ্য বিক্রি করতে পেরেছি শুধুমাত্র উই প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে। আমি সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা আপু,উপদেষ্টা রাজিব আহমেদ স্যার,সকল ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝিতে শুরু করে বেশ সাড়া পান শামিরা। গরুর মাংসের আচার, মুরগির মাংসের আচার, রসুনের আচার, আমের টক-মিষ্টি মোরব্বাসহ আরও কয়েকটি পদ আচার রয়েছে সামিরার ‘ছায়াবৃক্ষ’ এ ।
সামিরার ‘ছায়াবৃক্ষ’ পেজের লিংক: https://www.facebook.com/chayabrikkho2020/