অস্ট্রেলিয়াতে ধীরে ধীরে বিয়ের গুরুত্ব হয়তো কমে যাচ্ছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে এর গুরুত্ব একটুও কমেনি। অস্ট্রেলিয়া বসবাসরত বাঙালিদের জন্য বিয়ে সংক্রান্ত এই কঠিন বিষয়ে সাহায্য করছে রাফি হক এর ‘ম্যাট ম্যাচ’ ।
যারা প্রবাসে থাকে তাদের বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী খুঁজা সত্যিই এক বিরম্বনা। তাই আমি আমার ম্যাট ম্যাচের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া বসবাসরত বাঙালিদের জন্য বিয়ে সংক্রান্ত এই কঠিন বিষয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। যারা অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন এবং যারা দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করেন তারা আমার ম্যাট ম্যাচের মাধ্যমে সঠিক তথ্যর সন্ধান পেতে পারেন।
বর্তমান টেকনোলজির যুগে যেকোন বিষয় তথ্য জানার জন্য একটি ওয়েবসাইট থাকাটা খুব জরুরী। প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিয়ের জন্য তেমন কোন ওয়েবসাইট নেই। বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্যও যদি এমন একটি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে সঠিক তথ্যর মাধ্যমে প্রবাসীরা এবং যারা দেশে থাকেন তারা তাদের যোগ্য সঙ্গী খুঁজে নিতে পারবে এই থেকে শুরু হয় ম্যাট ম্যাচ এর যাত্রা । সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন।
১. অস্ট্রেলিয়া কবে গেলেন? সেখানে গিয়ে দেশের কি কি মিস করেন?
আমি অস্ট্রেলিয়া যাই ২০০০ সালে এবং সেই হিসেবে ২০ বছর হয়ে গিয়েছে। মাঝ খানে কয়েক বছরের জন্য বাংলাদেশে এসে থেকেছিলাম। অস্ট্রেলিয়াতে বাংলাদেশের অনেক কিছু মিস করেছি এবং এখনও করি। দেশি খাবার, পরিবার ও আত্বীয় স্বজনের সাথে সময় কাটানো এসব খুব বেশি মিস করি। উইতে এক্টিভ হবার পর অনেকের সাথে খুব ভালো সম্পর্কে হয়ে গেছে এবং আমার মন চায় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে যদি চলে যেতে পারতাম তাহলে অনেকের সাথে দেখা হতো এবং কথাও হতো।
২. ই-ক্যাবের সাথে পথ চলা নিয়ে কিছু বলেন?
অস্ট্রেলিয়াতে ই-কমার্স অনেক বছর ধরেই বেশ উন্নত। ২০১৬ সালে গুগুলে ও ফেসবুকে বাংলাদেশের ই-কমার্স নিয়ে সার্চ করতে গিয়ে ই-ক্যাবের ফেসবুক গ্রুপের সন্ধান পাই। তা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছিল। সেখানে দেখতে পাই যে ই-ক্যাবের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট দিনরাত ই-কমার্স এবং ই-ক্যাব নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। ই-ক্যাবকে আবার কিছু লোক আক্রমন করছে প্রতিদিন তিনি আবার সেগুলোর উত্তর দিচ্ছেন সারারাত জেগে। তার সাপোর্টে আমরা কয়েকজন পালাকরে ই-ক্যাব গ্রুপে সময় দিতাম। রাজীব ভাইয়ের ই-ক্যাবের সভাপতির মেয়াদ শেষ হলে আমিও সেখানে ইনএক্টিভ হয়ে যাই।
৩. উদ্যোক্তা না হয়েও সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে উইতে থাকার কারন কি?
ই-ক্যাব নিয়ে রাজীব ভাইয়ের চেষ্টাটা প্রতিদিন দেখতাম ২০১৬-২০১৭ সালে। তাই রাজীব ভাই যখন উই গ্রুপের হাল ধরেন তখন আমি কোন রকম চিন্তা না করে সেখানে যোগ দেই ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে। তারপর যখন অনলাইনে দেশি পণ্যের ডাক দেয়া হলো তখন আমার কাছে তা খুব ভালো লেগেছে। প্রথম দিকে খুব কম লোক ছিল এবং রাজীব ভাইয়ের দিনরাত সময় দিয়ে কষ্ট করাটা আমি দেখেছি।
৪. দেশি পণ্যের ই-কমার্সে কিভাবে আপনার ভুমিকা রাখতে চান?
আমি মূলত একজন কাস্টমার বা ক্রেতা এবং আমি আমার পরিচিত সবাইকে উই গ্রুপের কথা বলি, দেশি পন্য কেনার কথা বলি। তবে আমার লেখাপড়া ছিল আইটি বা তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে এবং ই-কমার্স নিয়ে মাস্টার্সে কোর্সও করেছি। এছাড়া গত চার বছর ধরে প্রথমে ই-ক্যাব গ্রুপ এবং উই এর সাথে যথেষ্ট সময় দেয়াতে ই-কমার্স নিয়ে মোটামুটি অনেক কিছুই জানা হয়েছে। তাই আমার ইচ্ছা আছে ই-কমার্স নিয়ে নিয়মিত লেখালিখি করে দেশি পণ্যের উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বিষয় জানানো।
৫. কখনও কি উদ্যোক্তা হওয়ার সপ্ন আছে?
অস্ট্রেলিয়াতে আমি চাকরি করছি দীর্ঘদিন ধরে তাই আপাতত ইচ্ছে থাকলেও উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব নয়।
৬. ম্যাট ম্যাচ কিভাবে এবং কেন শুরু করলেন? কয়জন মিলে শুরু করেছেন? এতে বাঙালিরা কিভাবে উপকৃত হবে বলে মনে করেন?
জীবনে একেক সময় একেক দিকে আগ্রহ থাকে আমার ক্ষেত্রে কেন যেন ছোটবেলা থেকে ঘটকালিতে আগ্রহ ছিল। সেই থেকে শখের বসে ম্যাট ম্যাচের সূচনা। যারা প্রবাসে থাকে তাদের বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী খুঁজা সত্যিই এক বিরম্বনা। তাই আমি আমার ম্যাট ম্যাচের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া বসবাসরত বাঙালিদের জন্য বিয়ে সংক্রান্ত এই কঠিন বিষয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। কারন যারা অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন এবং যারা দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করেন তারা আমার ম্যাট ম্যাচের মাধ্যমে সঠিক তথ্যর সন্ধান পেতে পারেন।
৭. ম্যাট ম্যাচ চালাতে গিয়ে কি কি বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন এবং সমাধান কিভাবে করেছেন?
ম্যাট ম্যাচ চালাতে গিয়ে যদি বাঁধার কথা বলি তাহলে বলতে হয় অনেক ধরনের বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কারন বিয়ে সংক্রান্ত আমাদের দেশে অনলাইন সার্ভিস ততটা বিশ্বাসযোগ্য নয় এবং তেমন কোন ওয়েবসাইট নেই যেখানে এসব বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। সঠিক তথ্যের অভাবে অনেকে সেবা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। আর আমি যেহেতু প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করি সেখানে এটা আরও বড় চ্যালেঞ্জ।
৮. ম্যাট ম্যাচ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
ম্যাট ম্যাচ নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে যখন আমার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে আমি এটাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেব। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করবো যেখানে পাত্র-পাত্রীদের যাবতীয় তথ্য থাকবে এবং ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমেও নিজের কাজকে আরও সুন্দর ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবো।