দেশি পোশাকে বিয়ে এখন বর-কনের পছন্দের ট্রেন্ড। বিয়ের আয়োজনের ষোলো আনা পূর্ণ করতে এখন বর-কনের পোশাক, জুতা, গয়না থেকে শুরু করে সাজ-সরঞ্জামের নানা অনুষঙ্গে থাকছে দেশীয় ছাপ। ডিজাইনারও চাহিদা বিবেচনায় দেশীয় কাপড় আর মোটিফ দিয়ে বিয়ের সাজ-পোশাকের সম্ভার তুলে ধরছেন। এসব পোশাকের নকশায় যেমন থাকছে নতুত্বের ছোঁয়া তেমনি দামও হাতের নাগালেই।
বিদেশি পণ্যের চাকচিক্যের ভীরে আজকাল সবাই দেশি পণ্যের দিকে ঝুঁকছে। বেড়েছে তাঁতের শাড়ীর চাহিদা। জামদানী, মনি পুরি,টাঙ্গাইল এর তাঁতিদের ফিরে এসেছে সুদিন। বিদেশি শাড়ী বাদ দিয়ে দেশি মনিপুরী শাড়ীতে বিয়ে সাজে ঢাকা কেরানীগঞ্জ জিঞ্জিরার এর স্থানীয় বাসিন্দা রিমানা জামান ।
রিমানা জামান চাইলে লাখ টাকা দিয়ে দামি ইন্ডিয়ান কিংবা পাকিস্তানি লেহেংগা কিংবা শাড়ী বিয়ে জন্য নিতে কিন্তু তিনি দেশি পোশাকে ভালোবাসা মনিপুরী শাড়ী পছন্দ করেন।
রিমানা জানান, আমার অনেক ইচ্ছে ছিল বিয়েতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী শাড়ি পরব। হলুদ শাড়ী সবুজ পাড় মনিপুরী শাড়ী পছন্দ হয় অনলাইন শপ থেকে । দেশি শাড়ির প্রতি আমার অনেক বেশি। আমাদের শাড়ির শিল্পমর্যাদা যে কত উঁচুতে, সে ধারণা নেই আমাদের অনেকেরই।
রিমানা জামান বিয়েতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী শাড়ি পরার গল্প জানাচ্ছেন সুলতানা পারভীন ।
বিয়ের জন্য শুধু জামদানি না অন্য শাড়ি গুলো নিয়েও লেখালেখি করতে হবে অনলাইনে। বিয়ের শাড়ি হিসেবে শুধু দেশি শাড়ি এক সময় জনপ্রিয় হোক ফ্যাশন হোক।
বর্তমানে অনেকের মহা আয়োজন করে বিয়ে করার প্ল্যান থাকলেও ঘরোয়া আয়োজনে বিয়ে করে ফেলছেন বর্তমান পরিস্থিতির জন্য। তেমনি আমার এক ননদ যার বিয়ে অনেক আয়োজন করে করার প্লান থাকলেও তিনি কিন্তু চাইতেন অনেক ছিমছাম এর মধ্যে যেনো উনার বিয়ে হয়। আপু তার ইচ্ছে মতো পছন্দ করলেন সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মনিপুরী শাড়ী বিয়েতে পরবেন। একটা হলুদ শাড়ী সবুজ পাড় মনিপুরী শাড়ী পছন্দ করে নিয়ে নেন তিনি।
আমি মনে করেছিলাম আপু হয়তো হলুদে পরবে। কিন্তু আপু এটা ঠিক করে রেখেছেন বিয়ের দিন পরার জন্য।
আমি এটা দেখে অনেক খুশি হয়েছিলাম এই ভেবে যে একজন পুরাপুরি ঢাকার মানুষ হয়ে সেই সিলেটের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বুঝি এমন হয়। আপু চাইলে পারতেন লাখ খানেক টাকা দিয়ে দামি ইন্ডিয়ান কিংবা পাকিস্তানি লেহেংগা কিংবা শাড়ী নিতে কিন্তু আপু তার ভালোবাসা দিয়েই মনিপুরী শাড়ী পছন্দ করেন। আমার আরো বেশি ভালো লাগে কারণ এই শাড়ী আমি নিজের হাতে আপুকে বিয়ের দিন পরিয়ে দিয়েছিলাম। সত্যি একজন সিলেটি হয়ে তখন আমার মনটা গর্বে ভরে উঠেছিলো।
আর আপুকে দেখতেছিলাম জীবনে প্রথম মনিপুরী শাড়ী পরা বউ, কি যে অপুর্ব লাগতেছিলো মাশাআল্লাহ আপুকে।
এর পর আমার একটা প্লান সেট করে রেখেছি যদি কখনো আমার ভাইয়ার বউ কিংবা নিজের কারো বিয়ের কাপড় ডিজাইন করার সুযোগ হয় আমি মনিপুরী শাড়ী নিয়ে ফিউশন করে বিয়ের ড্রেসাপ করবো।
রাজিব আহমেদ এর মতো আমিও বলতে চাই আমাদের দেশের দেশিও অনেক সুন্দর শাড়ী আছে। আপনারা যারা শাড়ী নিয়ে কাজ করেন বিভিন্ন ফিউশন এনে ভিন্নভাবে কিন্তু বিয়ের শাড়ী হিসাবে উপস্থাপন করতে পারেন। এতে করে আমাদের দেশিও শাড়ীর কদর আরো বহুগুণ বেড়ে যাবে।